বাংলাদেশের স্বাধীনতার কথা মনে হলে, একজন মানুষের কথা আগে মনে পড়ে।তিনি হলেন আমাদের স্বাধীনতার প্রাণপুরুষ, মহানায়ক জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজ ১৭ই মার্চ ২০২৩, সেই মহানায়কের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী।
১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ ( ৩রা চৈত্র ১৩২৭ বঙ্গাব্দ)তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের প্রেসিডেন্সির অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটিগাতি ইউনিয়নের বাইগার নদী তীরবর্তী টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি শেখ বংশের গোড়াপত্তনকারী শেখ বোরহান উদ্দিনের বংশধর।তার বাবা শেখ লুৎফুর রহমান। তিনি গোপালগঞ্জ দায়রা আদালতের হিসাব সংরক্ষণকারী ছিলেন।তার মা সায়েরা খাতুন ছিলেন গৃহিণী। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান। তার জন্মদিনটি ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়।তিনি রাজনৈতিক জীবনে এক যুগেরও বেশি সময় কারাগারে কাটিয়েছেন। দুইবার ফাঁসির কাষ্ঠে ও ১৮ বার কারাবরণ করেছেন।পাকিস্তানি শাসক চক্রের প্রতিবাদে ৫২- এর রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, ৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট আন্দলোন,৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন,৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭০-এর নির্বাচনে জয় এবং সর্বশেষ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ সবই বাঙালি জাতির সংগ্রামের ইতিহাসের এক-একটি মাইলফলক। আর এই সংগ্রামের নেতৃত্ব ও বলিষ্ঠ ভূমিকায় ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের সময় কারাগার থেকে মুক্তির পর তিনি ‘বঙ্গবন্ধু ‘ উপাধিতে ভূষিত হন।১৯৭১ সালের ৭-ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানের( বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ভাষণের মাধ্যমে বাঙালি জাতির মনে স্বাধীনতার প্রতি অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন।১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে এবং ২৬ মার্চ রাতের প্রথম প্রহরে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিম পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়।তারপর দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লক্ষ শহিদ ও ১ লক্ষ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি স্বাধীনতা।১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন।কিন্তু মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় মানবতার শত্রু,স্বাধীনতা বিরোধী, দেশি ও বিদেশি ঘাতক চক্র ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। এরই মাধ্যমে একজন মহানায়কের সংগ্রামী জীবন শেষ করে দেওয়া হয়।