ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কারণে বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘিত হচ্ছে অভিযোগ এবং সংস্কারের পরিবর্তে আইন বাতিলের দাবিতে প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আয়োজিত এক সমাবেশে এ দাবি উপস্থাপন করা হয়।
এসময় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কাস্টাডিয়াল কিলিং, ডি এস এতে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, সুলতানা ও জেসমিনের কাস্টাডিয়াল কিলিং এর তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার দেখা যায়।
সমাবেশে ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থী আরাফাত সাদ বলেন,
“সরকারের তরফ থেকে আলোচনা হচ্ছে সংস্কারের কিন্তু আমরা চাই নিরাপত্তা আইন বাতিল হোক।ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এসেছিল ২০১৮ সালে যখন বড় বড় দুইটি আন্দোলন – কোটা সংস্কার আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলন হয় এবং ২০১৮ সালেই ছিলো জাতীয় নির্বাচন। ফলে সে সময় বিরোধী দলের মত দমন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল আওয়ামীলীগের শাসন বজায় রাখার জন্য।তারা তাই ২০১৮ সালেই এই আইন প্রণয়ন করে।এর আগে যে আইনটা ছিলো তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা সেটিও ২০১৩ সালে প্রণয়ন করা হয়েছিল ২০১৪ সালের নির্বাচনকে সফল করার জন্য।অর্থাৎ এ জাতীয় আইন কেবল বিশেষ কোনো পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।
এই আইনের বেশিরভাগ যেসব মামলা করা হয় তা করে থাকে সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা সাংবাদিক ও বিরোধী দলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে । বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের দাম বৃদ্ধি নিয়ে নিউজ করায় শামসুজ্জামান শামসের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণ নিরাপত্তা পায় না বরং নিরাপত্তা পায় এই সরকারের মন্ত্রী -আমলারা।
ডিজিটাল মিডিয়ায় যে অপরাধ গুলো করা হয় তার জন্য বাংলাদেশ সংবিধানে প্রায় একশটার উপর আইন ও তার ধারা আছে।সেগুলো দিয়েই এসকল অপরাধ দমন সম্ভব। কিন্তু সেটা না করে ২০১৮ সালে বিশেষ একটা আইন প্রণয়ন করা হয় বিরোধী মত দমনের জন্য যেন আরো দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকতে পারে।
আমরা মনে করি এই আইন চাপের মুখে বাতিল করা সম্ভব। এর আগেও এরকম অনেক আইন বাতিল হয়েছে। ”
পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী তন্ময় বলেন,”একটি সরকার টিকে থাকে দুইটি দলের সমথর্ন নিয়ে।একটি হলো জনগনের সমর্থন।অন্যটি হলো প্রভাবশালীদের সমর্থন।এখানে সুস্পষ্ট যে আওয়ামী লীগ প্রভাবশালীদের সমর্থনে টিকে আছে। সরকার মূলত প্রভাবশালীদের নিরাপত্তার জন্য সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রবর্তন করেছেন।এভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ১৯৭৪ সালের বিশেষ আইন,২০০৬ সালের আইসিটি আইন, ২০১৮ সালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করেছেন।”
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ বলেন,” ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতায় কারো মানহানি হলে মামলা দেওয়া হয় কিন্তু এই মানহানির আসলে স্ট্যান্ডার্ডটা কোথায়? আজকাল তো যে কেউ যেকোনো বিষয়ে মনে করতে পারে তার মানহানি হয়েছে।মানহানীর সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে প্যানাল কোর্টের ৪৯৯ নং ধারায় কিন্তু কথা হচ্ছেই ধারাটি ভারতে অলরেডি এই ধারার বিরুদ্ধে রিট করা হচ্ছে বাতিলের জন্য।তাহলে একটি বিতর্কিত ধারার কীভাবে আমরা একটি জনমুখী আইন তৈরী করতে পারি?”