সুজলা-সুফলা শস্য-শ্যামলা আমাদের এই দেশ। আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পৃথিবীর অন্য সব দেশের চেয়ে আলাদা। তাই যতবার তাকাই ততবারই হারিয়ে যাই এর অপরূপ সৌন্দর্যের মায়ায়। আমাদের দেশে রয়েছে কতশত নদী, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র, খাল-বিল, আছে নানা ধরনের জীব বৈচিত্র্য।
রয়েছে পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার। আরো আছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন। যেখানে রয়েছে নানান ধরনের পশু পাখি। পৃথিবীর মধ্যে হয়তো হাতে গোনা কয়েকজন লোক থাকবে যারা সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সম্পর্কে জানে না।
এক কথায় বলতে গেলে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের এক লীলাভূমি আমাদের এই বাংলাদেশ। কিন্তু অবাক করা বিষয় হচ্ছে, প্রকৃতির এই সকল সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। এক সময় বুড়িগঙ্গা নদীর পানি মানুষ ব্যবহার করত তাদের দৈনন্দিন কাজে। কিন্তু বর্তমানে সেই বুড়িগঙ্গা নদী মৃত নদী বা ডেড রিভার-এ পরিণত হয়েছে। যেখানে ছিল অজস্র মাছের আনাগোনা সেখানে এখন প্লাস্টিকের বোতল আর কলকারখানার বর্জ্য দিয়ে ভড়া।
সুন্দরবন যাকে বলা হত বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্যের জন্য অভয়াশ্রম সেখানে এখন নানান ধরনের জীব প্রত্যক্ষ করা হয়ে পড়েছে কালে-ভদ্রের ব্যাপার। দিন দিন সুন্দরবনের পশু পাখির সংখ্যা কমেই যাচ্ছে। আর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কথাই বা কী বলবো কয়েকদিন বাদে বাদেই সামুদ্রিক জীবের মৃতদেহ এসে ছিটকে পড়ছে সৈকত তীরে। পর্যটক যারা যায় তারা সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য উপভোগ তো করেই পাশাপাশি সমুদ্র সৈকত কে তাদের ডাস্টবিন হিসেবেও ব্যবহার করে আসে নানা ধরনের ময়লা-আবর্জনা ফেলার মাধ্যমে।
বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে উঠেছে নানান কলকারখানা যার বর্জ্য পদার্থ সরাসরি নদীতে এসে নদীর পানিকে দূষিত করছে। নদী দিয়ে পারাপারের সময় মানুষ তাদের খাবারের উচ্ছিষ্ট প্লাস্টিকের বোতল এবং নানান ধরনের ময়লা আবর্জনা নদীর পানিতে ফেলছে যার ফলে বুড়িগঙ্গা নদী এখন আর আগের মত নেই।
এখন একটু ভেবে দেখুন তো এইসকল প্রাকৃতিক
সৌন্দর্যে ঘেরা জায়গাগুলোকে বিপর্যয়ের মুখে কারা ঠেলে দিচ্ছে? বুড়িগঙ্গা নদী, সুন্দরবন এবং কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের বর্তমান এই অবস্থার পেছনে কাদের হাত রয়েছে? কারা মূলত দায়ী এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের? উত্তর আসবে আপনি, আমি, আমরা সবাই এর পেছনের দায়ি। আমাদের কর্মকাণ্ডের ফলেই প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা এই জায়গাগুলোর আজ এই অবস্থা। তাই চলুন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বিপর্যয় বন্ধে একতাবদ্ধ হই। দেশ মাতৃকার অপরূপ সৌন্দর্য আবার ফিরিয়ে আনি।
মো. মারুফ আহম্মেদ বাঁধন
শিক্ষার্থী
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়