১৭০ বছর পর হারিয়ে যাওয়া ঢাকাইয়া মসলিন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় নারায়ণগঞ্জে আবার তৈরি চলছে। এরপর বান্দরবানে উৎপাদিত কলাগাছের আঁশের সুতা দিয়ে তৈরি হয়েছে আকর্ষণীয় শাড়ি। মৌলভীবাজারের মণিপুরী কারিগর রাধাবতী দেবীর তৈরি করা শাড়িটিই বাংলাদেশে কলাগাছের সুতায় তৈরি প্রথম শাড়ি। শাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে কলাবতী সুতি শাড়ি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তীবরীজির আন্তরিক প্রচেষ্টায় শিল্পটি সাফল্যের পথে এগুচ্ছে ধাপে ধাপে। শাড়ির আগে ব্যাগ, ঝুড়ি, ফুলদানি, কলমদানি, ফাইল ফোল্ডার, পাপসসহ বিভিন্ন ধরনের শোবিজ এবং জিনিসপত্র তৈরি করা হয়েছিল। জেলা প্রশাসন ও কয়েকটি উন্নয়ন সংস্থার তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পের সাফল্য ও উদ্যোক্তাদের চাহিদার ভিত্তিতে এটি বর্তমানে সদর, রুমা ও রোয়াংছড়ি উপজেলায়ও সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
এ শাড়ী তৈরির কারিগর শ্রদ্ধেয় রাধাবতী দেবী, যিনি সুদূর মৌলভীবাজার থেকে জেলাপ্রশাসকের আহবানে সাড়া দিয়ে বান্দরবানে এসে এ শাড়ীটি বুনে দিয়েছেন। তাঁর এলাকায় যারা মনিপুরী শাড়ী বুনেন তাঁরা তাঁকে বলেছিলেন এ দায়িত্ব না নিতে। কারণ তাঁরা ভয় পাচ্ছিলেন তিনি ব্যর্থ হবেন এবং জেলা প্রশাসকের কাছে কথা দিয়ে তা বাস্তবায়ন না করতে পারার কারণে মনিপুরী তাঁত শিল্পীরা ছোট হবেন। রাধাবতী দেবী এ চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন এবং সফল হয়েছেন, সেই সাথে সফল করেছেন জেলাপ্রশাসকের স্বপ্ন ও চিন্তাকে। আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও নিরন্তর শুভকামনা শ্রদ্ধেয় রাধাবতী দেবীর জন্য। সেই সাথে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি জনাব আতিয়া চৌধুরী, উপপরিচালক, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও জনাব সাই সাই উ নিনি, প্রভাষক, বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয় কে যারা জেলাপ্রশাসক, বান্দরবানের স্বপ্নের সারথি হয়ে রুটিন কাজের বাইরে গিয়ে সকল প্রকার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন
মণিপুরী কারিগর রাধাবতী দেবী বলেন, জীবনে অনেক রকমের শাড়ি তৈরি করেছি। কিন্তু কলাগাছের আঁশের সুতায় প্রথম শাড়ি তৈরি করলাম। জেলা প্রশাসকের আমন্ত্রণে মৌলভীবাজার থেকে বান্দরবান এসেছিলাম শাড়ি তৈরির চ্যালেঞ্জ নিয়ে। পরীক্ষামূলকভাবে ১৫ দিনের চেষ্টায় একটি শাড়ি তৈরি করতে পেরেছি। পাতলা আঁশের সুতায় কাপড় বুনা সত্যিই কষ্টসাধ্য। একটা সময় মনে হয়েছিল সম্ভব নয়, কিন্তু শেষ পর্যন্ত সফলভাবে শাড়ি তৈরি করতে পেরে আমি ভীষণ খুশি। আমার জন্য এটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। কারণ এটির সাথে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ও মণিপুরী কারিগরদের সম্মান যুক্ত ছিল।