বিরূপ আবহাওয়ার কারণে পাবনায় এবার পেঁয়াজের ফলন কম হয়েছে। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন কমেছে প্রায় ৬০ হাজার মেট্রিক টন। কৃষকেরা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় তাঁরা ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলেন। তবে বর্তমানে ভালো দাম পাওয়ায় সেই ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যানুযায়ী, দেশে গত বছর প্রতি হেক্টর (সাড়ে ৭ বিঘা) জমিতে পেঁয়াজের গড় উৎপাদন ছিল ১৪ দশমিক ১৭ মেট্রিক টন। এবার উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ দশমিক ৬০ মেট্রিক টনে। এতে সারা দেশেই পেঁয়াজের উৎপাদন কমেছে।
অন্যদিকে পাবনার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, গত বছর এই জেলার ৯ উপজেলায় ৫৩ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছিল ৭ দশমিক ৯৭ লাখ মেট্রিক টন। এবার ৫২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয়েছে ৭ দশমিক ৩৭ লাখ মেট্রিক টন। তার মানে এবার উৎপাদন কমেছে ৬০ হাজার মেট্রিক টন
গত রোববার সরেজমিনে জেলার সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন এলাকা সুজানগর উপজেলার কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, মাঠে আর কোনো পেঁয়াজ নেই। মাঠ থেকে পেঁয়াজ তোলা শেষ। বাড়িতে পেঁয়াজ সংরক্ষণে ব্যস্ত চাষিরা। কিছু বাড়ির আঙিনায় চলছে পেঁয়াজ শুকানোর কাজ।
পেঁয়াজচাষিরা জানান, চাষিরা এবার দেশি পেঁয়াজের সঙ্গে আগাম জাতের হাইব্রিড পেঁয়াজ রোপণ করেছিলেন। আগাম জাতের হাইব্রিড পেঁয়াজের ফলন ভালো হয়েছে। প্রতি বিঘা জমি থেকে পেঁয়াজ মিলেছে ৪০ থেকে ৪৫ মণ পর্যন্ত। তবে দেরিতে লাগানো নাবি বা দেশি জাতের পেঁয়াজের উৎপাদন প্রতি বিঘায় ২০–২২ মণ।
প্রতি বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদনে কৃষকের খরচ ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। মৌসুমের শুরুতে বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। এতে কৃষকেরা লোকসান গুনেছেন। তবে ঈদের পর থেকে বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা ও দাম দুটিই বাড়তে শুরু করেছে। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ ১ হাজার ৪৫০ থেকে ১ হাজার ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এ প্রসঙ্গে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধি
দপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. ইদ্রিস আলী বলেন, উৎপাদন কম হলেও প্রথম থেকেই এবার পেঁয়াজের দাম অনেক কম ছিল। তবে পেঁয়াজ কাটা শেষ হওয়ার পর থেকেই দাম বাড়তে শুরু করেছে। এতে কৃষক খুশি। অন্যদিকে সারা দেশেই উৎপাদন কমেছে।