মশাহিদ আলী : সিলেটে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছেন কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। লাভের আশায় মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে মৃত্যুর মুখে। নকল পণ্য আসল বলে বিক্রি কিংবা রাজধানীর চক বাজারের পণ্য বিদেশী পণ্য বলে বিক্রি করে থাকেন।এছাড়াও আমদানিকারকের স্টীকারবিহীন বিদেশীপণ্য নিজস্ব মূল্য বসিয়ে বিক্রয়। এখানে যে তারা সীমাবদ্ধ তা কিন্তু নয়।অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রমজানে ইফতার সামগ্রী তৈরি ও তার মধ্যে তেলাপোকা মিলছে।
তবে এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত অভিযান পরিচালনা করছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়।
জানা যায়,রমজান ও আসন্ন ঈদকে ঘিরে সিলেট নগরের বিভিন্ন জায়গায় অনুমোদনহীন পণ্য ও ভেজাল প্রসাধনী বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়।তিনদিনে সিলেট নগরের পৃথক তিনটি স্থানে অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ৮২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সূত্র জানা যায়,গত ৩ এপ্রিল(সোমবার) সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারস্থ শ্যামলী মার্কেটে অভিযান চালিয়ে প্রতারণা ও ভেজাল পণ্য বিক্রির দায়ে ৪টি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করে ভোক্তা অধিকার সিলেট কার্যালয় পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সিলেটের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্থ।
অভিযানকালে শ্যামলী মার্কেটের পায়েল ইমিটেশন নামক দোকানকে ১০ হাজার, শিফাত ইমিটেশন জুয়েলারিকে ৮ হাজার, মুসকানকে ১০ হাজার ও শিউলী ককসমেটিকস সেন্টারকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঢাকার চকবাজারে তৈরি পণ্যকে বিদেশি বলে বিক্রি, ভেজাল ও নকল পণ্য এবং বিএসটিআই নিষিদ্ধপণ্য বিক্রির মাধ্যমে ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এই অপরাধে তাদের অর্থদণ্ড দেওয়া হয়।
একইভাবে ৪ এপ্রিল (মঙ্গলবার) নগরীর লালাদিঘিরপাড় নিউ মার্কেটে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আমদানিকারকের হলোগ্রামযুক্ত স্টিকার না থাকা ও নকলপণ্য বিক্রির দায়ে তিনটি প্রতিষ্ঠানকে ৪০হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জরিমানাকৃত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে লালদিঘিরপাড় নিউ মার্কেটের নিউ লক্ষী ভান্ডারকে ২০ হাজার টাকা, মেসার্স মেহেদী ষ্টোরকে ১০ হাজার টাকা ও সুদর্শন এন্টারপ্রাইজকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভোক্তা অধিকার সিলেটের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্থ।
এছাড়াও এসময় মহাজনপট্টিতে কাপড় ব্যবসায়ীদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে লিফলেট বিতরণ করা হয়।
এই দুই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরিফ মিয়া,কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সদস্য তামান্না আক্তার ও ধীমান ঘোষ।
অভিযানে র্যাব-৯এর একটি অভিযানিক দলও এসময় উপস্থিত ছিল।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) নগরীর শিবগঞ্জে অবস্থিত রাজমহল সুইটস এন্ড ফায়ার ফুডসের ইফতার সামগ্রী তৈরির স্থান অপরিচ্ছন্ন, নোংরা এবং তেলাপোকা থাকার কারণে অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
ওইদিন দুপুরে জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সিলেট কার্যালয়ের টিম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালন করে এ অর্থদণ্ড প্রদান করেন।
ভোক্তা অধিকার সিলেটের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আরিফ মিয়া বলেন,শিবগঞ্জে রাজমহল সুইটস এন্ড ফায়ার ফুডস আজ দুপুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে রাজমহলের ইফতার সামগ্রী তৈরির স্থান অপরিচ্ছন্ন, নোংরা পাওয়া যায়। একই সাথে খাবারে তেলাপোকা থাকায় তাদেরকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়।
এব্যাপারে ভোক্তা অধিকারের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্ত বলেন,রমজান ও আসন্ন ঈদ ঘিরে সিলেট নগরের বিভিন্ন জায়গায় অনুমোদনহীন ও ভেজাল প্রসাধনী বিক্রির চেষ্টা চলছে।নকল পণ্য বিক্রির ফলে মানুষের চামড়ায় নানা ধরনের রোগবালাই সৃষ্টি করে।
তিনি বলেন, জনস্বার্থে এ সব পণ্য বিক্রির বিরুদ্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলবে।