বেশি বেশি হাসুন;প্রানবন্ত থাকুন
বিপ্লব ইসলাম,
গণমাধ্যম কর্মী এবং কলামিস্ট
আপনার সকল ধরনের আচরনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক হলো মুখের মিষ্টি হাসি,হাসি দিয়ে যেমন আপনি অন্যকে খুশি করতে পারবেন ঠিক তেমনি আপনার এই মিষ্টি হাসির কারণেই আপনি অন্যদের কাছে হয়ে উঠবেন একজন আকর্ষণীয় মানুষ, আবার এই হাসির জন্য একজন সুন্দর মনের সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন। অসংখ্য অনুভূতির মধ্যে হাসি মানুষের জীবনে সবথেকে একটি ভালো এবং চমৎকার এক অনুভূতি। একজন মানুষের জীবনে হাসির ভুমিকা অত্যাবশকীয়। কারণ হাসি এবং মানসিক স্বাস্থ্য একে অপরের একদম পরিপূরক। এই হাসি শুধু আপনার দিকে অন্যের দৃষ্টিপাত ঘটায় এমনটাই নয়, সুন্দর হাসি মানুষকে চরম আত্নবিশ্বাসী করে গড়ে তোলে।এছাড়াও মানসিক দুশ্চিন্তা,ক্ষোভ,রাগ, দুঃখবোধ,ব্যাথা, যেকোন দ্বন্দ্ব ছাড়াও শারীরিক মানষিক নানান সমস্যা সহ ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রের শক্তিশালী প্রতিষেধক ঔষধ হিসেবে কাজ করে।খুব ক্লান্ত মনকে স্তিমিত করে কাজে ফেরাতে হাসির বিকল্প অপরিসীম ।আমাদের নার্ভ সহ অন্তর আত্মাকে শিথিল করে নতুন উদ্যমে জাগিয়ে তোলে। আমাদের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা সহ আমাদের ক্ষমাশীল করে তোলে একমাত্র হাসি। আমাদের কর্মস্থল এবং কাজে দায়িত্ব ও মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি, মানুষের সঙ্গে আন্তরিকতা ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে এই হাসির বিকল্প নেই।
চমৎকার একটি হাসি আমাদের অতিরিক্ত মানসিক চাপ কিংবা উদ্বেগ এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকেও কমিয়ে দেয়। কর্মক্ষেত্রে দুর্দান্ত উপায়ে, দলবদ্ধভাবে ও মানসিকভাবে শক্তি নিয়ে কাজ করতে হাসিখুশি থাকা খুবই জরুরি এবং এটি একটি চমৎকার টেকনিক। যিনি যতটা হাসিখুশি থাকবেন, দিন শেষে তিনি নিজেকে ততটাই সুখী হিসেবে আবিষ্কার করতে পারবেন।
এই হাসির উপকারিতা ব্যাপক,যেমন :
দেহে রোগ প্রতিরোধী এন্টিবডি তৈরিতে, হার্টের সমস্যা দূর করতে,বিষণ্ণতা ও মানসিক চাপ দূর করতে,রাগ দমনে ও সৌহার্দভাব বজায় রাখতে, দেহের ব্যথা দূর করতে,ক্যান্সার প্রতিরোধে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে,মানসিক চাপ থেকে মুক্তি পেতে,সামাজিক বন্ধন অটুট রাখতে,শ্বাসতন্ত্রের উপকারিতায়,ক্যালরি বার্ন করাতে,দীর্ঘায়ু পেতে,জীবনীশক্তি বাড়াতে,দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করতে ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রের জন্য হাসির ভুমিকা অতুলনীয়।বলা হয় যে সকল মানুষ বেশি হাসতে পারেন না তারা তাদের ব্যক্তিগত জীবনেও নানা রকমের সমস্যায় থাকেন।হাসি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। আপনি যখন হাসেন তখন আপনার দেহের রক্ত সঞ্চালন বেড়ে যায় এবং অক্সিজেন গ্রহণের মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়।আমাদের মস্তিষ্কের এনডোরফিন (হরমোন) নামের একটি কেমিক্যাল নিঃসরণ করে থাকে যা আমাদের দেহের ব্যথা দূর করে হাসি। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি জরিপে দেখা গিয়েছে যে মানুষ যত বেশি হাসবে তার দেহের ব্যথা তত বেশি কমবে। হাসি দেহকে ক্যান্সার রোগ থেকে বাঁচাতে সাহায্য করে। আমেরিকার ক্যান্সার ট্রিটমেন্ট সেন্টারে ক্যান্সার রোগীদের হাসানোর জন্য বিশেষ থেরাপি দেয়া হয়ে থাকে। যা একজন ক্যান্সার রোগীর দেহের ব্যথা দূর করে ও মন ভালো রাখে।মানসিক চাপ দূর করে হাসি। তাই যখনই যেমন অবস্থায় থাকুন না কেন মন ভালো রাখতে ও মানসিক চাপ দূরে রাখতে হাসুন।কারণ হাসার কোন বিকল্প নেই, হাসলে শরীর ও মন দুটোই সুন্দর, সতেজ ও প্রানবন্ত থাকে। তাই বেশি বেশি হাসুন এবং সুস্থ দেহ গঠনের মাধ্যমে সুন্দর মনের অধিকারী হোন।
লেখক:
বিপ্লব ইসলাম,
গণমাধ্যম কর্মী এবং লেখক।
রাংগামাটি জেলা।