বিশ্বনাথ প্রতিনিধি:: সিলেটের বিশ্বনাথের খাজাঞ্চী ইউনিয়ন যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি সফিক খানের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ব্ল্যাকমেইল করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ।
সফিক ইউনিয়নের প্রয়াগমহল গ্রামের মৃত ইদ্রিস খানের ছেলে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৮ জুন) রাতে সফিক খান বিশ্বনাথ থানায় অভিযোগ প্রদান করলে পুলিশ ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের মঙ্গলগীরি গ্রামের জুনাব আলীর ছেলে সিরাজুল ইসলামকে (২৫) আটক করে।অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় সফিক খান বাদী হয়ে আটককৃত সিরাজুল ইসলামসহ ৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার অপর অভিযুক্তরা হলেন- দূর্লভপুর গ্রামের মৃত সিকন্দর আলীর ছেলে রমজান আলী (২৫) ও মঙ্গলগীরি গ্রামের মৃত খলিল মিয়ার ছেলে লায়েক মিয়া (২০)। এছাড়া মামলায় আরও অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে অভিযুক্ত করা রয়েছেন।
এদিকে, ভিডিও ভাইরালের পর ‘দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজে লিপ্ত থাকা’র অভিযোগে উপজেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক সামছুল ইসলাম ও যুগ্ম আহবায়ক মুসলিম আলী স্বাক্ষরিক এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ‘সফিক খান’কে দলীয় পদ থেকে বহিস্কার করেন।
অপরদিকে, এলাকাবাসীর অভিযোগ- নিজের অপকর্ম চাপা দিতে ও তার প্রতিপক্ষের কিছু মানুষকে হয়রানি করতে ‘অন্তরঙ্গ মুহুর্তের আপত্তিকর ভিডিও ভাইরালের ঘটনা’য় সফিক খান থানায় মামলা করেছেন। এ ঘটনার আসল রহস্য উদযাটন ও সাধারণ মানুষ যাতে ওই মামলায় হয়রানির শিকার না হন সেজন্য থানা পুলিশের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
মামলার এজাহারে সফিক খান উল্লেখ করেন, তার ব্যক্তিগত স্মার্টফোনে স্ত্রীর সাথে তার দাম্পত্য জীবনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও সংরক্ষিত ছিল। সম্প্রতি স্থানীয় প্রীতিগঞ্জ বাজারস্থ তার দোকান থেকে ব্যক্তিগত ওই মোবাইল ফোনটি চুরি হয়। পরবর্তীরে চুরি হওয়া মোবাইল ফোনটি তিনি দোকানেই পেয়ে যান। তখন তিনি দেখতে পান- তার মোবাইলে সংরক্ষিত স্ত্রীর সাথের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও নেই।
ঘটনার পর গত ৪ জুন গভীর রাতে সফিক খানকে মুঠোফোনে কল করে অভিযুক্ত সিরাজুল ইসলাম জানায়, তার (সিরাজুল) কাছে সফিকের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও রয়েছে এবং এ বিষয়ে পরদিন তার (সিরাজুল) সাথে সরাসরি দেখা করে এ বিষয়ে কথা বলতে বলেন। পরদিন (৫ জুন) দুপুরে প্রীতিগঞ্জ বাজারে সিরাজুল ইসলামের সাথে সরাসরি দেখা করেন সফিক খান। তখন সিরাজুল ইসলামের সাথে ছিলেন অভিযুক্ত রমজান ও লায়েক।এসময় অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে সফিকের কাছে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন সিরাজুল ইসলাম। এতে অপারগতা প্রকাশ করেন সফিক খান। পরবর্তীতে গত ৬ জুন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সফিক খানের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও ভাইরাল করে দেন অভিযুক্তরা। এতে সামাজিকভাবে ৩ মেয়ে ও ১ ছেলেসন্তানের জনক সফিক খানের মান-সম্মান ক্ষুন্ন হয়েছে বলে দাবী তার।
মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) গাজী আতাউর রহমান বলেন, প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।বাকী অভিযুক্তদের গ্রেফতার পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।