আন্তর্জাতিক ডেস্ক:: গত ২৩ জুন রাশিয়ার সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ বিদ্রোহ করে। বিদ্রোহের পর দেশটির সেনাবাহিনীর শীর্ষ দুই জেনারেল ভ্যালারি গেরাসিমোভ এবং সের্গেই সুরোভিকিন আড়ালে চলে যান। এবার রুশ জেনারেল সের্গেই সুরোভিকিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার গ্রুপের সশস্ত্র বিদ্রোহের পর তাকে গ্রেফতার করা হয়। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মস্কো টাইমস।
তবে সুরোভিকিনের গ্রেফতারের খবর নিয়ে এখনও কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। সুরোভিকিন রুশ বিমান বাহিনীর প্রধান ও ইউক্রেন অভিযানের প্রথম দিকে রুশ বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
গত শুক্রবার (২৩ জুন) রুশ সামরিক নেতাদের উৎখাতের ডাক দিয়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ ঘোষণা করেন ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। পরদিন শনিবার (২৪ জুন) তার যোদ্ধারা ইউক্রেন সীমান্ত পেরিয়ে রাশিয়ার রাজধানী মস্কো অভিমুখে অভিযাত্রা শুরু করে।
তবে ওইদিন রাতেই ঘটনা নাটকীয় মোড় নেয়। বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কার মধ্যস্থতায় এ অভিযাত্রা বন্ধ করতে সম্মত হন প্রিগোজিন। সমঝোতায় বলা হয়, প্রিগোজিন বেলারুশে চলে যাবেন। বিদ্রোহের কারণে তার ও তার যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রত্যাহার করা হবে।
এরপর পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হয়ে আসছে। ওয়াগনার বাহিনীর বিদ্রোহ অবসানের পর সোমবার (২৬ জুন) প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে দেখা যায় রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগুকে।
এরই মধ্যে একাধিকবার সামনে এসেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভও। তবে শনিবার থেকে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে দেখা যায়নি জেনারেল সুরোভিকিনকে।
মস্কো টাইমসের প্রতিবেদন মতে, রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ঘনিষ্ঠ দুটি সূত্রের একটি নাম প্রকাশ না শর্তে বলেছে, ‘তার (সুরোভিকিনের) পরিস্থিতি ‘ঠিক’ ছিল না। আমি এর বেশি কিছু বলতে পারছি না।’
দ্বিতীয় সূত্র অনুসারে, প্রিগোজিনের বিদ্রোহের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সূত্রের কথায়, ‘আপাতদৃষ্টিতে, তিনি [সুরোভিকিন] বিদ্রোহের সময় প্রিগোজিনের পক্ষ বেছে নিয়েছিলেন এবং এজন্য তারা (কর্তৃপক্ষ) তাকে চেপে ধরেছে।’
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দাদের দাবি, সুরোভিকিন ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের বিদ্রোহের বিষয়টি আগেই জানতেন। ওয়াগনার প্রধানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিল।
২০২২ সালে ইউক্রেন অভিযানকালে সুরোভিকিনকে যখন রুশ বাহিনীর কমান্ডার নিয়োগ করা হয়, তখন এই নিয়োগে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত হন প্রিগোজিন। সে সময় তাকে ‘কিংবদন্তি ব্যক্তিত্ব’ ও ‘জন্মভূমির সেবা করার জন্যই তার জন্ম’ প্রভৃতি বাক্যে প্রশংসা করেন তিনি।