এন আর ডি ডেস্ক নিউজ ঃ
ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। চলতি সপ্তাহে দেশটির সামরিক নেতারা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ বাজুমকে ক্ষমতাচ্যুত করার ঘোষণা দেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রও একই কাজ করার হুমকি দিয়েছে।
নাইজার বিশ্বের অন্যতম দরিদ্র একটি দেশ। বিশ্বব্যাংকের মতে, দেশটি সরকারি উন্নয়ন সহায়তার অংশ হিসেবে বছরে প্রায় ২০০ কোটি ডলার অনুদান পেয়ে থাকে।
নাইজার, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো পশ্চিমা দেশগুলোর একটি গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা অংশীদার, যারা দেশটিকে পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার সাহেল অঞ্চলে ইসলামি বিদ্রোহ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ঘাঁটি হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। পূর্বে বেশ কয়েকটি প্রতিবেশী দেশে অস্থিরতা বিরাজ করলেও নাইজারকে সবচেয়ে স্থিতিশীল একটি দেশ হিসেবে দেখা হতো। নাইজার হলো বিশ্বের সপ্তম-বৃহৎ ইউরেনিয়াম উৎপাদনশালী দেশ।
নাইজারের বিদেশি মিত্ররা এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট গার্ডের প্রধান জেনারেল আব্দুরহামানে তচিয়ানির নেতৃত্বাধীন নতুন সামরিক সরকারকে স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করেছে। তাকে গত শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান ঘোষণা করা হয়। অবশ্য প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের ভেতরে থাকাকালীন বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বাজুমের কোনও সাড়া পাওয়া যায়নি। যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশগুলো এখনও তাকেই বৈধ প্রেসিডেন্টের স্বীকৃতি দিচ্ছে।
ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, নাইজারের বাজেট সহায়তা অবিলম্বে বন্ধ করার পাশাপাশি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সকল সহযোগিতা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
নাইজারের প্রায় ১১০০ সৈন্য নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে এবং তারা নিরাপত্তা ও উন্নয়ন সহায়তার জন্য দেশটিকে লাখ লাখ ডলার প্রদান করে।
নাইজার হলো সাব-সাহারান আফ্রিকা থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের প্রবাহ রোধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। সামরিক প্রশিক্ষণ মিশনের জন্য নাইজারে ইইউরও অল্প সংখ্যক সৈন্য মোতায়েন রয়েছে। ইইউয়ের ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০২১-২০২৪ সালের মধ্যে নাইজারে সুশাসন, শিক্ষা এবং টেকসই প্রবৃদ্ধির উন্নতির জন্য তাদের বাজেট থেকে ৫৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে।
জাতিসংঘ বলেছে,নাইজারের অভ্যুত্থান তাদের মানবিক সহায়তা বিতরণে কোনও প্রভাব ফেলেনি। তবে দেশটিতে সামরিক জান্তার প্রতি ঠিক কতটা জনসমর্থন রয়েছে, তা এখনও অস্পষ্ট। গত বুধবার বাজুমের সমর্থনে কিছু জনতা বেরিয়েছিল, কিন্তু পরের দিনই আবার অভ্যুত্থানের সমর্থকরা রাস্তায় বিক্ষোভ করে।