এন আর ডি ডেস্ক নিউজ ঃ
জাতীয় ও রাজ্য স্তরের সমীকরণে ফারাক ছিলই। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে ঘটনাপ্রবাহের জেরে জাতীয় স্তরেও তৃণমূল কংগ্রেসের পাশে বসা নিয়ে আপত্তি আরও জোরালো হতে শুরু করল বাংলার কংগ্রেসের অন্দরে।
মনোনয়ন-পর্বের শুরু থেকেই মুর্শিদাবাদ-সহ একাধিক জেলায় শাসক তৃণমূলের সঙ্গে বিরোধী কংগ্রেসের সংঘর্ষ চলছে। কংগ্রেসের একাধিক কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। রাজ্যের কংগ্রেস নেতাদের একাংশের বক্তব্য, যে তৃণমূলের হাতে দলের কর্মীরা মার খাচ্ছেন, প্রাণ দিচ্ছেন, সেই তৃণমূলের নেত্রীর সঙ্গেই বারবার সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতারা বৈঠকে বসলে কর্মী মহলের কাছে ভুল বার্তা যাবে। রাজ্যে তৃণমূল ও কংগ্রেসের সমঝোতা হবে না বলে দু’পক্ষই যখন বুঝিয়ে দিয়েছে, তা হলে শুধু জাতীয় স্তর বা অন্যান্য রাজ্যের কথা ভেবে এমন বৈঠকে বিভ্রান্তি ছাড়া আর কী হবে— যুক্তি দিচ্ছেন ওই অংশ। প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক ও মুখপাত্র সুমন রায়চৌধুরী যেমন শুক্রবারই কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে ও প্রাক্তন সভাপতি রাহুল গান্ধীর উদ্দেশে খোলা চিঠিতে আর্জি জানিয়েছেন, ‘তিলে তিলে লড়াই করে, জীবন দিয়ে যে হাজার হাজার কর্মীরা কগ্রেসকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, বেঙ্গালুরুতে বৈঠক করার আগে তাঁদের কথা এক বার ভেবে দেখবেন’। বিরোধী শিবিরের পরবর্তী বৈঠক হওয়ার কথা বেঙ্গালুরুতে। প্রদেশ কংগ্রেসের একাংশের বক্তব্য, গোটা পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীকে ‘বিজেপির এজেন্ট’ বলে আক্রমণ করেছেন। বাংলার কংগ্রেসকে তুলোধোনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই পরিস্থিতিতে পটনায় রাহুল-মমতার একত্র বৈঠককে প্রচারে কাজে লাগিয়েছে বিজেপি। বেঙ্গালুরুতে আবার একই ঘটনা ঘটলে বিজেপি আরও বলার সুযোগ পাবে বলে কংগ্রেসের ওই অংশের মত।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর ইতিমধ্যেই বলেছেন, তাঁদের দলের ‘অত্যাচারিত’ কর্মী-সমর্থকেরা ‘অত্যাচারী’ দলের নেতৃত্বের সঙ্গে নিজেদের দলের শীর্ষ নেতাদের একত্রে দেখতে চান না। তবে সিদ্ধান্ত হাই কম্যান্ডের হাতে। এআইসিসি সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, বাংলা বা কেরলের রাজনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে জাতীয় ক্ষেত্রের ‘বাধ্যবাধকতা’ মেলে না। কিন্তু বিজেপি-বিরোধিতার লক্ষ্যে অন্য বিরোধীদের সঙ্গে সমন্বয় করেই চলতে হবে কংগ্রেসকে।