ময়মনসিংহে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। রোববার ভোরে শুভ মহালয়ার পূণ্য প্রভাতে নগরীর ঐতিহ্যবাহী দুর্গাবাড়ি নাট মন্দিরে চণ্ডীপাঠ, ঢাক-শঙ্খ ধ্বনি ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে দেবী দুর্গাকে মর্ত্যে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
ভোর ৬টা ২ মিনিটে মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে দেবী আবাহনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। সমবেত সঙ্গীত, মাতৃ বন্দনা ও নৃত্যনাট্যে মহিষাসুর বধের কাহিনী মঞ্চায়ন করা হয়, যা দেখে উপস্থিত শত শত ভক্ত আবেগে আপ্লুত হন। মন্দিরে মন্দিরে চণ্ডীপাঠের মাধ্যমে সূচিত হয় দেবীপক্ষ এবং দেবীর চক্ষুদানের প্রস্তুতিও শুরু হয়।
মহালয়ার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয় পিতৃপক্ষ, আর দেবীপক্ষের সূচনার কারণে দিনটি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠী তিথিতে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে দুর্গাপূজার মূল অনুষ্ঠান। তবে মহালয়ার দিন থেকেই শহরজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আগমনধ্বনি। পূজা মণ্ডপগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি, আলোকসজ্জা আর প্রতিমা নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের পথে।
দৈনিক আজকের বাংলাদেশ–এর নির্বাহী সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ পাল বলেন, “মহালয়া মানেই দেবীর কাছে প্রার্থনা—তিনি যেন শান্তি, শক্তি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে মর্ত্যে আগমন করেন।”
দেবী আবাহনের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুর্গাবাড়ি আর্যধর্ম জ্ঞানপ্রদায়িনী সভার সভাপতি প্রফেসর বিমল কান্তি দে, সাধারণ সম্পাদক শংকর সাহা, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ মহানগর শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট প্রশান্ত কুমার দাস চন্দন এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পিযুষ কান্তি সরকারসহ হিন্দু ধর্মাবলম্বী শত শত ভক্ত।
এ বছর ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৮৮টি এবং পুরো জেলায় ৭৮১টি পূজা মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে পূজা নির্বিঘ্নে আয়োজনের জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
