বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেছেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান শুধু একজন ব্যক্তি নন, তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। তার কাজ নিয়ে গবেষণা করা যায়। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতিকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে যোগ্য ব্যক্তিদের কাজে লাগিয়েছিলেন। তার হাত ধরেই প্রথমে বাণিজ্য এবং পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান সাইফুর রহমান। ভেঙে পড়া অর্থনীতিকে তিনি সংস্কার করেন, আধুনিক ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবর্তন করেন। এ সময় শেখ হাসিনা তার বিরোধিতা করে হরতাল ডাকলেও সাইফুর রহমান ছিলেন অবিচল। তার এই সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনো টিকে আছে।
সোমবার দুপুরে সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজে সাইফুর রহমানের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করেছেন সাইফুর রহমান। ভারতের রাষ্ট্রপ্রধান তার কাছে পরামর্শ নিতেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তার কাছে সহায়তা চাইতেন। তিনি ছিলেন সিলেটবাসীর জন্য আশীর্বাদ, যিনি পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছেন তিনি। মানুষের উন্নয়নই ছিল তার জীবনের প্রধান চিন্তা।
তিনি আরও বলেন, কোম্পানীগঞ্জের উন্নয়ন নিয়েও সাইফুর রহমান সবসময় ভাবতেন। এই কলেজ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তিনি শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকার কেবল লুটপাটের চিন্তা করেছে, ফলে এ কলেজের উন্নয়ন হয়নি। তবে শিগগিরই কলেজটি সরকারি হবে এবং নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। নতুন করে শিক্ষাব্যবস্থা সাজাতে হবে। স্কুল, কলেজের পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষায়ও সমান গুরুত্ব দিতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে মিফতাহ্ সিদ্দিকী বলেন, তোমরা মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করো এবং সাইফুর রহমানের মতো দেশের জন্য কাজ করো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এম. সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মূর্শেদ আলম এবং সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক মো. জয়নাল আবেদীন।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাজী আব্দুল মান্নান, উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির আজমান আলী, শিক্ষক আবুল হাশেম, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বুরহান উদ্দিন খন্দকার ফরহাদ, গভর্নিং বডির সদস্য আজিজুল হক, ওমর ফারুক, জুয়েল আহমদ, আবুল খায়ের, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল বাশার, উপজেলা ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের সাধারন সম্পাদক আসাদুল হক আসাদ, শাহ নেওয়াজ লিটন, সিলেট জেলা যুবদলের সদস্য খোকন রঞ্জন দে, উপজেলা বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ওসমান খান, বিএনপি নেতা নুরুল আমিন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন, অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, অধ্যাপক শামীম আরা বেগম, প্রাইমারি শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি আবুল খায়ের।
স্বাগত বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মূর্শেদ আলম বলেন, এম সাইফুর রহমান এ অঞ্চলের মানুষের কথা ভেবে এ কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বহু উন্নয়ন করেছিলেন। কিন্তু সৈরাচারী শেখ হাসিনার শাসনামলে এ কলেজের কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্তমান গভর্নিং বডির সভাপতি মিফতাহ্ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে নতুন করে উন্নয়ন ও সংস্কার কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
