নেত্রকোনা প্রতিনিধি:
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার ফাজিলপুর বাজার এলাকায় জমি দখল, দোকানঘর ভাঙচুর এবং প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ময়মনসিংহের ত্রিশাল পৌরসভার বাসিন্দা মো. আলমগীর কবির (৫৩) পূর্বধলা থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এন নুরুল আলম অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “বিষয়টি তদন্তাধীন। প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
আলমগীর কবিরের দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, তার পিতা মৃত আলতাব আলী সরকারের কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পূর্বধলার ফাজিলপুর মৌজায় তিনি ৬০ শতাংশ জমির মালিক হন। এর মধ্যে তিন শতাংশ জমি দীর্ঘদিন ধরে তিনি মো. মজিবুর রহমান নামের এক চায়ের দোকানদারকে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে খবর পেয়ে আলমগীর জানতে পারেন, স্থানীয় কচুমুদ্দিনের পাঁচ ছেলে—মো. সুলতান (৪০), মো. শাহ পরান (৩৫), মো. আলমগীর (৩০), মো. শাহ আলম (২৫) ও মো. আকাশ (২২)—লাঠিসোটা নিয়ে পূর্বপরিকল্পিতভাবে তার জমিতে প্রবেশ করে দোকানঘর ভাঙচুর করেছেন। তারা দোকানঘরের টিন ও ছাউনি ভেঙে ফেলেন, যার আনুমানিক ক্ষতি প্রায় ৫০ হাজার টাকা।
পরে তারা একটি ড্রাম ট্রাক এনে জমিতে মাটি ফেলে জবরদখলের চেষ্টা চালায়।
সংবাদ পেয়ে জমির মালিক আলমগীর কবির, তার ভাই শাহজাহান কবির ও স্ত্রী নূর জাহান আক্তার ঘটনাস্থলে গেলে অভিযুক্তরা তাদের মারধরের চেষ্টা করেন এবং প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, অভিযুক্তরা বলেন—“এই জমিতে আর আসলে মেরে ফেলব, লাশ গুম করব।”
তবে এ সময় উপস্থিত কিছু স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ভুক্তভোগী দোকানদার মো. মজিবুর রহমান বলেন, “আমি গত ২০ বছর ধরে এখানে চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করছি। দোকানটি আলমগীর সাহেবের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে চালাচ্ছি। কোনো ধরনের পূর্বাবগতিসহ ওয়ার্নিং ছাড়াই হঠাৎ করে দিনের বেলা আমার দোকান ভেঙে ফেলা হয়। এতে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
ফাজিলপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. ফেরদৌস মিয়া বলেন, “এ ধরনের ঘটনা অগ্রহণযোগ্য ও বেআইনি। জমি দখল, ভাঙচুর ও প্রকাশ্যে হুমকি দেওয়ার ঘটনা খুবই নিন্দনীয়। আমি প্রশাসনের কাছে দ্রুত দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। ফলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।