সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১০ হাজার ২১৯টি সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)। দীর্ঘ অপেক্ষার পর এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হওয়ায় চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) রাজা মোহাম্মদ আবদুল হাই স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রথম পর্যায়ে রংপুর, বরিশাল, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগের স্থায়ী নাগরিকরা আবেদন করতে পারবেন। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি পরবর্তী ধাপে প্রকাশ করা হবে।
বেতনস্কেল ও বয়সসীমা
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতনস্কেল অনুযায়ী ১১,০০০–২৬,৫৯০ টাকা (গ্রেড–১৩) নির্ধারিত হয়েছে।
আবেদনকারীর বয়স হতে হবে ২০২৫ সালের ৩০ নভেম্বর তারিখে ন্যূনতম ২১ বছর ও সর্বোচ্চ ৩২ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের ক্ষেত্রে সরকার নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী বয়সে ছাড় দেওয়া হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা
আবেদনকারীর স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে। কোনো স্তরে তৃতীয় বিভাগ বা সমমানের সিজিপিএ গ্রহণযোগ্য হবে না।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর জানিয়েছে, উচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও যারা বিদ্যালয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করতে আগ্রহী, তাদের জন্য এটি দেশের অন্যতম সেরা সুযোগ।
আবেদনের সময়সীমা ও পদ্ধতি
প্রার্থীদের সম্পূর্ণ আবেদন প্রক্রিয়া অনলাইনে সম্পন্ন করতে হবে।
আবেদন শুরু হবে ২০২৫ সালের ৮ নভেম্বর সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে এবং শেষ হবে ২১ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে।
আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ওয়েবসাইটে:
http://dpe.teletalk.com.bd
আবেদনের ফি নির্ধারিত হয়েছে ১১২ টাকা, যা টেলিটকের মাধ্যমে পরিশোধ করতে হবে। ফি পরিশোধের পরেই আবেদনটি চূড়ান্তভাবে গৃহীত বলে গণ্য হবে।
পরবর্তীতে SMS-এর মাধ্যমে পাঠানো নির্দেশনা অনুসারে আবেদনকারী প্রবেশপত্র (Admit Card) ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।
নিয়োগ প্রক্রিয়া ও শর্তাবলী
নির্বাচিত প্রার্থীদের নিজ নিজ উপজেলা বা শিক্ষা থানায় পদায়ন দেওয়া হবে। পদায়নের পর বদলি সীমিত থাকবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রার্থীদের জন্য কিছু বাধ্যতামূলক শর্তও নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন—
- ধূমপায়ী বা মাদকাসক্ত কেউ আবেদন করতে পারবেন না।
- লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য কোনো টিএ/ডিএ ভাতা দেওয়া হবে না।
- সকল কাগজপত্র সত্যায়িত করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে।
- ভুয়া বা অসম্পূর্ণ তথ্য প্রদান করলে আবেদন বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষ নির্দেশনা ও কোটার সুবিধা
বিবাহিত নারী প্রার্থী স্বামী বা পিতার স্থায়ী ঠিকানার যেকোনো একটি ঠিকানায় আবেদন করতে পারবেন। আবেদন যাচাইয়ের সময় উল্লিখিত ঠিকানার ভিত্তিতে প্রার্থিতা বিবেচনা করা হবে।
এছাড়া শারীরিক প্রতিবন্ধী, তৃতীয় লিঙ্গ ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত সনদপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ডিপিই জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যোগ্যতা, মেধা ও ন্যায্যতার ভিত্তিতেই চূড়ান্ত তালিকা প্রণয়ন করা হবে। পরীক্ষায় বা যাচাই-বাছাইয়ে কোনো ধরনের প্রভাব বা সুপারিশ গ্রহণযোগ্য নয়।
যোগাযোগ ও সহায়তা
আবেদন সংক্রান্ত যেকোনো প্রযুক্তিগত সমস্যায় প্রার্থীরা ই-মেইল করতে পারবেন vas.query@teletalk.com.bd ঠিকানায় অথবা টেলিটক কাস্টমার কেয়ার ১২১ নম্বরে যোগাযোগ করতে পারবেন।
ডিপিই জানিয়েছে, নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সম্পন্ন করা হবে। এ কারণে কোনো মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালের মাধ্যমে আবেদন বা সুপারিশ করার সুযোগ নেই।
চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে উৎসাহ
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ স্থগিত থাকায় নতুন এই বিজ্ঞপ্তিকে অনেকে ‘বড় সুযোগ’ হিসেবে দেখছেন। বিশেষ করে স্নাতক ডিগ্রিধারী তরুণ-তরুণীদের কাছে এটি সরকারি চাকরির দরজা খুলে দেওয়ার একটি সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
শিক্ষাবিদদের মতে, নতুন শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও শিক্ষকসংকট নিরসনে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
সূত্র: প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই)
ওয়েবসাইট: www.dpe.gov.bd











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited