দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জনে। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন।
রোববার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
তিনি জানান, গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দুই মাসে নতুন করে ভোটার বেড়েছে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন। এর ফলে পুরুষ ভোটার এখন নারীর তুলনায় ১৯ লাখ ৯ হাজার ৬১০ জন বেশি।
ইসি সচিব বলেন, “যারা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ১৮ বছর পূর্ণ করেছেন এবং নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন, তাদের সবাইকে এই হালনাগাদ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ভোটার তালিকাকে নিয়মিতভাবে হালনাগাদ ও নির্ভুল রাখার কাজ অব্যাহত রয়েছে।”
চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ১৮ নভেম্বর
তিনি আরও জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা আগামী ১৮ নভেম্বর প্রকাশ করা হবে।
তবে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত দাবি ও আপত্তি জানানো যাবে। তিনি বলেন, “চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরই জাতীয় নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হবে।”
পূর্ববর্তী তালিকার তুলনামূলক চিত্র
এর আগে গত ৩১ আগস্ট প্রকাশিত সম্পূরক ভোটার তালিকায় দেশে মোট ভোটার ছিল ১২ কোটি ৬৩ লাখ ৭ হাজার ৫০৪ জন। সেসময় পুরুষ ভোটার ছিল ৬ কোটি ৪১ লাখ ৪৫৫ জন, নারী ভোটার ৬ কোটি ২২ লাখ ৫ হাজার ৮১৯ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার ১ হাজার ২৩০ জন।
তখন নতুনভাবে যুক্ত হয় ১ লাখ ৩৭ হাজার ৬৪২ জন ভোটার—এর মধ্যে পুরুষ ৯৪ হাজার ১৯২ জন, নারী ৪৩ হাজার ৪৪৪ জন, এবং তৃতীয় লিঙ্গের ৬ জন।
এছাড়া চলতি বছরের ২ মার্চ দেশে মোট ভোটার ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। পরবর্তীতে ৩০ জুন পর্যন্ত নিবন্ধিত ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করে ১০ আগস্ট প্রকাশ করা হয় সম্পূরক খসড়া ভোটার তালিকা।
সে সময় ৪৫ লাখ ৭১ হাজার ২১৬ জন নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছিলেন—এর মধ্যে পুরুষ ১৮ লাখ ৭০ হাজার ২০৩ জন, নারী ২৭ লাখ ৭৬২ জন, এবং তৃতীয় লিঙ্গের ২৫১ জন।
একই সময়ে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৫৯০ জন ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়েন, যাদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ২৪ হাজার ৯০২ জন, নারী ৯ লাখ ৭ হাজার ৬৬৭ জন, এবং তৃতীয় লিঙ্গের ২২ জন।
ভোটার তালিকা আরও নির্ভুল করার উদ্যোগ
আখতার আহমেদ বলেন, ইসি নিয়মিতভাবে মৃত ভোটারদের বাদ দেওয়া, নতুনদের অন্তর্ভুক্ত করা এবং তথ্য হালনাগাদ করার মাধ্যমে তালিকার যথার্থতা নিশ্চিত করছে।
তার ভাষায়, “ভোটার তালিকা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার অন্যতম ভিত্তি। তাই এটি যেন সঠিক থাকে, সে জন্য মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়মিত যাচাই-বাছাইয়ের কাজ করছেন।”
ইসি সূত্রে জানা যায়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পরই ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, ভোটার স্লিপ ছাপানো এবং ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে ভোটার বৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা তরুণ জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণের ইঙ্গিত দেয়। নতুন প্রজন্মের ভোটারদের সচেতনতা ও অংশগ্রহণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited