রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) অনুষ্ঠিত হলো উপদেষ্টা পরিষদের এক গুরুত্বপূর্ণ সভা। এতে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দেশের চলমান প্রশাসনিক কার্যক্রম, সামগ্রিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, এবং জনজীবনের সার্বিক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় সভায়। পরিষদের সদস্যরা বিভিন্ন দপ্তরের সর্বশেষ অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
সভায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জনগণের কল্যাণই আমাদের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য। দেশের উন্নয়ন শুধু অর্থনীতিতে নয়, নৈতিকতা ও সুশাসনের ক্ষেত্রেও নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি প্রশাসনিক সিদ্ধান্তে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও বাড়ানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।
অধ্যাপক ইউনূস আরও উল্লেখ করেন, দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে হলে কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং রপ্তানি খাতকে বিশেষ প্রণোদনা দিতে হবে। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের শক্তি তার মানুষ—তাদের মেধা, পরিশ্রম ও সৃজনশীলতাকে কাজে লাগিয়েই আমরা একটি টেকসই ও ন্যায্য অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারব।”
সভায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা ও জলবায়ু পরিবর্তন–সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। পরিষদের সদস্যরা জানান, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে প্রণীত নীতিমালা বাস্তবায়নে মাঠপর্যায়ের প্রশাসনের ভূমিকা আরও শক্তিশালী করতে হবে।
সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য আমাদের প্রশাসনকে উদ্ভাবনী, দায়িত্বশীল এবং মানবিক হতে হবে। প্রতিটি সিদ্ধান্তে যেন জনগণের স্বার্থই মুখ্য থাকে।”
সরকারের বিভিন্ন দপ্তর থেকে প্রাপ্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলমান সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলোর ইতিবাচক প্রভাব ইতিমধ্যে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক খাতে দৃশ্যমান হয়েছে। বিশেষ করে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেবার মান উন্নত হচ্ছে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার পরিষদের বিভিন্ন সদস্য, মুখ্য সচিব, এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও গতিশীল করার বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
সভা শেষে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আসন্ন মাসগুলোতে নাগরিক সেবা সহজীকরণ, দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম, এবং উদ্যোক্তা উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে আরও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক ন্যায়বিচার ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়েও নীতিগত দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা এমন একটি প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলতে চাই, যা কেবল দক্ষ নয়, নৈতিকতাবোধেও দৃঢ়। দেশের প্রতিটি মানুষ যেন সরকারের সেবাকে নিজের বলে মনে করতে পারেন—সেই লক্ষ্যেই আমাদের সব প্রচেষ্টা।”
সভা শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি স্বচ্ছ, ন্যায়ভিত্তিক ও মানবিক রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব হবে।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited