আওয়ামী লীগ এখনো রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধ থাকলেও তাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত রয়েছে। তবে এই অবস্থান স্থায়ী নয়, প্রয়োজনে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সম্ভাবনা আছে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
যুক্তরাষ্ট্র সফরের সময় ব্রিটিশ–আমেরিকান সাংবাদিক মেহেদি হাসানকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম জিটিও (Global Truth Outlet) এই সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করে।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ নয়, কার্যক্রম স্থগিত
মেহেদি হাসানের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
“আমরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, শুধু তাদের কার্যক্রম স্থগিত করেছি। তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধ আছে। তবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না।”
তিনি আরও বলেন, যে কোনো সময় পরিস্থিতির পরিবর্তন হলে এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া যেতে পারে।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গ
সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন আসে, আওয়ামী লীগ কি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে? উত্তরে ড. ইউনূস বলেন,
“এখন নয়, কারণ তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ আছে। কিন্তু তারা রাজনৈতিক দল হিসেবে বৈধ। কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা যেকোনো সময় উঠতেও পারে।”
তিনি স্পষ্ট করে জানান, দলীয় প্রতীক ছাড়া তাদের সমর্থকরা বৈধ ভোটার হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন এবং অন্য প্রার্থীদের ভোট দিতে পারবেন।
গণতন্ত্র ও নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক
সাংবাদিক মেহেদি হাসান প্রশ্ন করেন, একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম বন্ধ রাখা কীভাবে গণতান্ত্রিক হতে পারে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন—
“নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার মতো চরিত্র বিবেচনা করেই নির্বাচন কমিশন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আওয়ামী লীগ দীর্ঘ সময় ক্ষমতায় থেকেও তাদের কার্যকলাপের কোনো দায় নেয়নি। সহিংসতা ও হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, কিন্তু অনুশোচনা প্রকাশ করেনি।”
সমর্থক ও রাজনৈতিক বাস্তবতা
মেহেদি হাসান উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগের লাখো সমর্থক বাংলাদেশে রয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা এ বিষয়ে বলেন,
“তাদের সমর্থক আছে, কিন্তু সংখ্যাটা এখন কত, তা নিশ্চিত নয়। তবে দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের উপস্থিতি অস্বীকার করা যাবে না।”
সার্বিক প্রেক্ষাপট
প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্য নতুন রাজনৈতিক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কারণ, আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকলেও “সম্ভাবনা” শব্দের ব্যবহারে ভবিষ্যতে দলটির রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসার দ্বার খোলা রেখেছেন তিনি।
