প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত অমর একুশে বইমেলা এবার আগেভাগেই আয়োজনের প্রস্তাব উঠেছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন হবে বলে মনে করছে বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতি। এ কারণে তারা বইমেলা ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারিতে করার দাবি জানিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে দেওয়া এক চিঠিতে প্রকাশক সমিতি তিনটি সম্ভাব্য সময়সূচি প্রস্তাব করেছে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি, ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি, ৫ জানুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি।
প্রকাশকদের মতে, ফেব্রুয়ারির পরে মেলার ‘আমেজ’ থাকবে না। মার্চে ঈদ ও এপ্রিলের ঝড়-বৃষ্টি বইমেলার পরিবেশ নষ্ট করবে। এর আগের অভিজ্ঞতাও সুখকর ছিল না। করোনার কারণে ২০২১–২০২৩ সালে মেলা মার্চে সরানো হলে আয়োজন মান হারায় এবং প্রকাশকরা বড় ধরনের ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়েন।
সমিতির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির পরিচালক ও বইমেলা স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক আবুল বাশার ফিরোজ শেখ বলেন,
“ফেব্রুয়ারির পরে বইমেলা হলে আবহ আর থাকবে না। ডিসেম্বর বা জানুয়ারিই সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।”
মেলার সময়সীমা নিয়েও ভিন্ন মত রয়েছে। বই বিপণনকেন্দ্র ও প্রকাশনা সংস্থা বাতিঘরের কর্ণধার দীপঙ্কর দাশের মতে, বইমেলা মাসব্যাপী না হয়ে ১৫ দিনের হওয়া উচিত। এতে প্রকাশক ও রাষ্ট্র উভয়েরই খরচ কমবে এবং আয়োজনও হবে সাশ্রয়ী।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারির আগে মেলা করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাঁর ভাষায়,
“নির্বাচনের সময় নিরাপত্তা ও মানুষের অংশগ্রহণ প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে। আবার এপ্রিলের দিকে গেলে ঝড়-বৃষ্টি সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে। তাই ডিসেম্বর–জানুয়ারিই সবচেয়ে যৌক্তিক সময়।”
তিনি আরও জানান, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে প্রাথমিক সম্মতি দিয়েছে এবং আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে।
