প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিক সমান মর্যাদার অধিকারী। ধর্ম, মত কিংবা অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে কাউকে কোনোভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না।
আজ রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে তিনি মন্দির পরিদর্শন করেন।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। পুরো জাতি একটি পরিবার। পরিবারে মতভেদ থাকতে পারে, ব্যবহারের পার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পরিবার ভাঙার নয়—এটিকে অটুট রাখতে হবে। নতুন বাংলাদেশের লক্ষ্য হলো—এই ঐক্যবদ্ধ পরিবার হিসেবে দাঁড়ানো।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের কোনো অধিকার নেই বৈষম্য করার। নাগরিক হিসেবে যার যার অধিকার সংবিধানে লিপিবদ্ধ আছে। কোনো সরকারই কাউকে বঞ্চিত করতে পারে না। নাগরিক অধিকারের প্রশ্নে আমাদের সর্বদা সোচ্চার থাকতে হবে।”
নাগরিক অধিকার প্রসঙ্গে তিনি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “সবসময় বলুন—আমি এ দেশের নাগরিক, আমার সংবিধানপ্রদত্ত অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। তখন দেখবেন সবাই আপনাদের সঙ্গী হবে, কারণ সবার সমস্যাই এক—নিজের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।”
প্রধান উপদেষ্টা জোর দিয়ে বলেন, “আমরা চাই না নিরাপত্তা বাহিনীর ঘেরাটোপে থেকে ধর্ম পালন করতে। আমরা চাই, মুক্তভাবে নাগরিক অধিকার হিসেবে যার যার ধর্ম পালনের পরিবেশ তৈরি হোক। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালন করছে, এজন্য কৃতজ্ঞ। তবে এমন একটি দেশ গড়ে তুলতে হবে, যেখানে উৎসব পালনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার প্রয়োজন হবে না।”
শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে নিজের ব্যক্তিগত অনুভূতির কথাও তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস। তিনি বলেন, “আমি ভেবেছিলাম এবার হয়তো আমাকে এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিন্তু আমি নাছোড়বান্দা। তাই আগেভাগেই এসেছি আপনাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নিতে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দে। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক তাপস সাহা। এ সময় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এবং এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদও উপস্থিত ছিলেন।
