পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে মঙ্গলবার এক ভয়াবহ আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ছয়জন বেসামরিক নাগরিক এবং চারজন ফ্রন্টিয়ার কোর (এফসি) সদস্য রয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, কোয়েটায় ফ্রন্টিয়ার কোরের আঞ্চলিক সদর দফতরের বাইরে এ বিস্ফোরণ ঘটে। গণমাধ্যমে প্রচারিত সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সদর দফতরে প্রবেশের আগেই একটি গাড়ি শক্তিশালী বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়।
আত্মঘাতী হামলার কৌশল
স্থানীয় এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সুজুকি ভ্যানে থাকা এক আত্মঘাতী বোমা বহনকারী বিস্ফোরণ ঘটায়। এরপর তার পাঁচ সহযোগী কম্পাউন্ডে প্রবেশের চেষ্টা করে। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে গোলাগুলিতে তারা সবাই নিহত হয়। এ ঘটনায় আরও চারজন এফসি সদস্য ও ছয়জন সাধারণ মানুষ প্রাণ হারান।
দায় স্বীকার না হলেও সন্দেহ বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দিকে
এখনও কোনো গোষ্ঠী এ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে দীর্ঘদিন ধরে বালুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা এ অঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি তালেবানও নিয়মিত হামলার সঙ্গে জড়িত।
বালুচিস্তান পাকিস্তানের সবচেয়ে বড় প্রদেশ এবং প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ হলেও এটি দেশটির দরিদ্রতম অঞ্চলের একটি। মানব উন্নয়ন সূচকে অঞ্চলটি পিছিয়ে রয়েছে। বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি, বালুচ জনগণ বৈষম্যের শিকার, আর তারা সেই অবসান চায়।
সহিংসতার বাড়তি প্রবণতা
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর পিস স্টাডিজ (পিআইপিএস)-এর তথ্য অনুযায়ী, শুধু ২০২৪ সালেই দেশে ৫২১টি সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। চলতি বছর (২০২৫) এ সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬৭-এ। এসব সহিংসতার বেশিরভাগ ঘটনা আফগানিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘটেছে।
সংস্থার প্রেসিডেন্ট আমির রানা জানিয়েছেন, এ বছরের শুরু থেকেই বিশেষ করে বালুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার প্রবণতা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপট
কোয়েটার এই হামলার আগের দিন, সোমবার রাতে, পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় আপার সাউথ ওয়াজিরিস্তানে এক বিস্ফোরণে নয়জন সেনাসদস্য নিহত হন। ধারাবাহিক এসব হামলা পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে।
