জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সাধারণ পরিষদ হলে আজ মঙ্গলবার শুরু হচ্ছে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আন্তর্জাতিক সম্মেলন। রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান ও মানবাধিকার সুরক্ষার উদ্দেশ্যে আয়োজিত এই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন বিশ্বনেতা, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও কূটনীতিকরা।
কারা থাকছেন সম্মেলনে
প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানিয়েছেন, অন্তত ৭৫টি দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা ইতোমধ্যেই অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানও আছেন।
- সম্মেলনের সময়সূচি: নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় সকাল ১০টা (বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা)।
- বাংলাদেশের ভূমিকা: উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেবেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
- ওআইসি প্রতিনিধিত্ব: তুরস্ক।
- জিসিসি প্রতিনিধিত্ব: কুয়েত।
সম্মেলনের লক্ষ্য ও আলোচ্যসূচি
জাতিসংঘ আয়োজিত এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য—
- রোহিঙ্গা সংকটের প্রতি রাজনৈতিক সমর্থন জোরদার করা,
- আন্তর্জাতিক মনোযোগ ধরে রাখা,
- মানবাধিকারসহ সংকটের মূল কারণগুলো চিহ্নিত ও সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ,
- এবং একটি সময়সীমাবদ্ধ বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়ন।
সবচেয়ে অগ্রাধিকার পাবে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, স্বেচ্ছা ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন।
সম্মেলনের আগের বৈঠক
সম্মেলনের আগে সোমবার নিউইয়র্কে একাধিক বৈঠক করেছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন—
- জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি,
- মিয়ানমার বিষয়ক মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ,
- এবং ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল।
বৈঠকগুলোতে আলোচিত হয়েছে:
- রাখাইন রাজ্যের চলমান গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি,
- রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথনকশা,
- শরণার্থী শিবিরে অর্থায়ন বৃদ্ধি,
- রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলা।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হবে।
কেন গুরুত্বপূর্ণ এই সম্মেলন
২০১৭ সালে রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযানের পর থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা, নিরাপত্তাহীনতা এবং রাখাইনের গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে কার্যকর সমাধান পাওয়া যায়নি।
জাতিসংঘের আজকের সম্মেলন রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একটি নতুন গতি ও আন্তর্জাতিক অঙ্গীকার সৃষ্টি করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
