যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে ইমিগ্রেশন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) এজেন্টদের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন এক প্রবীণ মার্কিন নাগরিক। অভিযানের ঘটনায় সরকারের কাছে ৫০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন ৭৯ বছর বয়সী রাফি শোহেদ।
বৃহস্পতিবার এ আবেদন করেন শোহেদ, যিনি লস অ্যাঞ্জেলেসে একটি কার ওয়াশের মালিক। ১৯৮০-এর দশকে ইরান থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
আইনি প্রক্রিয়া অনুযায়ী, এ ধরনের ক্ষতিপূরণ দাবি মামলার পূর্বধাপ হিসেবে ধরা হয়। সাধারণত প্রথমে ফেডারেল সরকারের কাছে আবেদন জমা দেওয়া হয়, পরে সেটি আদালতে মামলা আকারে গড়ায়।
অভিযানে মারধরের অভিযোগ
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, মুখোশ ও ভারী অস্ত্রধারী কয়েকজন আইসিই এজেন্ট শোহেদকে টেনে হিঁচড়ে মাটিতে ফেলে মারধর করছে। এমনকি এক এজেন্টকে তার ঘাড়ে হাঁটু দিয়ে চাপ দিতে দেখা গেছে। শোহেদ অভিযোগ করেন, প্রায় ১২ ঘণ্টা চিকিৎসা ছাড়াই তাকে আটকে রাখা হয়।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “আমার হৃদরোগের সমস্যা আছে বলে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। আমি শুধু বলছিলাম, আমি শ্বাস নিতে পারছি না।”
মুক্তির পর শোহেদ হাসপাতালে ভর্তি হন। চিকিৎসকরা তার ভাঙা পাঁজর, কনুইয়ের চোট ও মাথায় গুরুতর আঘাত শনাক্ত করেন।
আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি
শোহেদের আইনজীবী জিম ডেসিমোন জানান, অভিযানের সময় তার মক্কেল সদ্য হার্ট সার্জারি করিয়েছিলেন। আইসিই এজেন্টরা তা জানার পরও উপেক্ষা করে সহিংস আচরণ করেছে।
অন্যদিকে, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ডিপার্টমেন্ট দাবি করেছে, ওই অভিযানে গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো থেকে আসা পাঁচ অবৈধ অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সঙ্গে শোহেদ ফেডারেল অফিসারের কাজে বাধা দেওয়ায় তাকে আটক করা হয়। তবে আইনজীবীর দাবি, সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে শোহেদ কোনো বাধা দেননি, বরং সহযোগিতা করেছেন।
বিতর্কিত অভিযান
আইসিই-এর সাম্প্রতিক অভিযানের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে তীব্র সমালোচনা চলছে। সমালোচকরা বলছেন, এসব অভিযান মূলত অভিবাসীপ্রধান এলাকাগুলোতে চালানো হচ্ছে এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
