সন্তান নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন? জেনে নিন গর্ভধারণের সঠিক সময় নির্ণয়ের ৫টি পদ্ধতি
সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্ত অনেক বড় ও আনন্দের বিষয়। তবে গর্ভধারণের আগে কিছু শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।
গর্ভধারণের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সময়কে বলে ফারটাইল উইন্ডো, আর এই সময় চেনার কিছু সহজ উপায় রয়েছে। একাধিক পদ্ধতি একত্রে ব্যবহার করলে সফলতার সম্ভাবনা আরও বেড়ে যায়।
১. সাদা স্রাব পর্যবেক্ষণ পদ্ধতি
প্রতিমাসে নারীদের শরীরে সাদা স্রাবের পরিবর্তন ঘটে।
এই স্রাবের ঘনত্ব ও পিচ্ছিলভাব দেখে গর্ভধারণের সম্ভাবনাময় সময় জানা যায়।
🔸 ঘন ও আঠালো স্রাব: গর্ভধারণের সম্ভাবনা মাঝারি
🔸 পাতলা ও পিচ্ছিল স্রাব: গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি (প্রায় ৩০%)
📌 টিপস: যেদিন থেকে স্রাব দেখা শুরু হয়, সেই দিন থেকে পরবর্তী তিন দিন পর্যন্ত সময়টি সন্তান নেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী।
২. শরীরের তাপমাত্রা মাপার পদ্ধতি
মাসিকের পর শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কম থাকে।
ডিম্বাণু বের হওয়ার সময় তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে যায় — প্রায় ০.২°C।
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই তাপমাত্রা মাপলে পরিবর্তনটি বুঝা যায়।
🕐 নিয়ম:
টানা ৬ দিন কম তাপমাত্রা, তারপর টানা ৩ দিন বেশি তাপমাত্রা থাকলে বুঝবেনডিম্বাণু বের হয়েছে।
তাপমাত্রা বাড়ার তৃতীয় দিন পর্যন্ত সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা বেশি।
৩. স্ট্যান্ডার্ড ডে পদ্ধতি
যাদের মাসিকের সাইকেল ২৬ থেকে ৩২ দিনের মধ্যে, তাদের জন্য এটি সবচেয়ে সহজ।
📅 নিয়ম:
মাসিক শুরু হওয়ার ৮ম দিন থেকে ১৯তম দিন পর্যন্ত সময়টি হলো ফারটাইল উইন্ডো।
এই সময়ের মধ্যে সহবাস করলে গর্ভধারণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।
৪. ক্যালেন্ডার হিসাব পদ্ধতি
অন্তত ছয় মাস ধরে মাসিকের তারিখ ক্যালেন্ডারে লিখে রাখুন।
সবচেয়ে ছোট সাইকেল থেকে ১৮ বিয়োগ করলে ফারটাইল উইন্ডোর শুরু, আর সবচেয়ে বড় সাইকেল থেকে ১১ বিয়োগ করলে শেষ দিন পাবেন।
🧮 উদাহরণ:
ছোট সাইকেল ২৬ দিন → ২৬-১৮=৮ → শুরু
বড় সাইকেল ৩৩ দিন → ৩৩-১১=২২ → শেষ
অর্থাৎ, মাসিক শুরু হওয়ার ৮ম দিন থেকে ২২তম দিন পর্যন্ত গর্ভধারণের সুযোগ বেশি।
৫. ওভুলেশন টেস্ট কিট ও অ্যাপ ব্যবহার
বর্তমানে অনেকেই ওভুলেশন টেস্ট কিট ব্যবহার করেন।
এগুলো প্রস্রাবে হরমোনের মাত্রা মেপে ডিম্বাণু বের হওয়ার সম্ভাব্য সময় জানায়।
এছাড়া Flo, Clue, বা Glow অ্যাপ ব্যবহার করেও আপনি ফারটাইল উইন্ডো ট্র্যাক করতে পারেন।
তবে এগুলো সহায়ক হলেও শতভাগ নির্ভরযোগ্য নয়, তাই একাধিক পদ্ধতি একসাথে ব্যবহার করাই ভালো।
চেষ্টা ব্যর্থ হলে কী করবেন?
সাধারণত ১ বছর নিয়মিত চেষ্টা করলে ৮০% দম্পতি সফল হন।
তবে যদি ৩৫ বছরের বেশি বয়স হয়, তাহলে ৬ মাস চেষ্টা করেও সফল না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
