বলিউডে তারকাসন্তান হওয়া যেমন আশীর্বাদ, তেমনি দায়ও বটে। একদিকে আলোচনার কেন্দ্রে থাকা, অন্যদিকে সারাক্ষণ সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়া—এই দুইয়ের ভারসাম্য রাখতে পারেন খুব কম জন। কিন্তু সারা আলি খান সেই বিরল অভিনেত্রীদের একজন, যিনি সমালোচনাকে ভয় নয়, বরং প্রেরণা হিসেবে নিয়েছেন।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সারা জানিয়েছেন, সমালোচনাই তাকে শিখতে ও বেড়ে উঠতে সাহায্য করেছে। তাঁর কথায়,
“আমি নিজেকে বারবার মনে করাই যে, কাজের সমালোচনা আমাকে শিখতে, বড় হতে, উন্নতি করতে সাহায্য করে। তাই আমি সেটার সম্মান করি।”
স্বজনপোষণের তকমা নয়, কাজেই প্রমাণ চান সারা
সাইফ আলি খান ও অমৃতা সিংহের কন্যা সারা আলি খানের বলিউডে অভিষেক হয়েছিল ২০১৮ সালে ‘কেদারনাথ’ ছবির মাধ্যমে। এরপর ‘সিম্বা’, ‘কুলি নং ১’, ‘অতরঙ্গী রে’ ও ‘জরা হটকে জরা বাঁচকে’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি।
তবে খ্যাতির আলোয় থাকা সত্ত্বেও সারার সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল ‘স্বজনপোষণ’ বা নেপোটিজমের অভিযোগ। শুরু থেকেই সমালোচকেরা তাকে তারকাসন্তান হিসেবে একধরনের বিশেষ সুবিধা পাওয়ার অভিযোগে skেপে ফেলেছিলেন।
কিন্তু সেই সমালোচনাকেই নিজের শক্তিতে রূপ দিয়েছেন সারা।
তিনি বলেন,
“আমি চাই মানুষ বলুক, আমি আমার যোগ্যতায় কিছু করে দেখিয়েছি। যদি কেউ আমার কাজের সমালোচনা করে, আমি সেটাকে ইতিবাচকভাবে নিই। কিন্তু যখন কেউ ব্যক্তিগত আক্রমণ করে, তখন তা নিজের মনে ঢুকতে দিই না।”
সমালোচনা নয়, আত্মবিশ্বাসই মূল চাবিকাঠি
সারা মনে করেন, একজন শিল্পীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো নিজেকে জানা ও নিজের মূল্যবোধে অটল থাকা। তাঁর ভাষায়,
“সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি কে, কী আমার মূল্যবোধ এবং আমার উদ্দেশ্য কী। আমি যাদের সঙ্গে কাজ করি বা যারা আমাকে পর্দার বাইরে চেনে, তাদের সঙ্গে একাত্ম থাকতে পারাটাই আমার কাছে বড় বিষয়।”
অভিনেত্রী আরও বলেন,
“খ্যাতির সঙ্গে ট্রোল বা কটাক্ষ যেন অবিচ্ছেদ্য হয়ে গেছে। অনেক সময় এসব ব্যক্তিগত আক্রমণ হয়ে যায়, যা মানসিকভাবে কষ্টদায়ক। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি নিজের মনে একধরনের ছাঁকনি তৈরি করেছি—কোন সমালোচনা গুরুত্ব দেওয়ার মতো, আর কোনটা নয়।”
‘ট্রোল’ নয়, ট্র্যাকেই মনোযোগ সারার
সারা আলি খান জানেন, আজকের দিনে তারকাদের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া একদিকে যেমন ভক্তদের সঙ্গে সংযোগের সেতু, তেমনি এটি কটূ মন্তব্যের ঝড়েরও উৎস।
তবুও তিনি এড়িয়ে চলেন অনর্থক প্রতিক্রিয়া।
“সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোল নিয়ে আমি কখনও বেশি ভাবি না। বরং সময় ব্যয় করি নতুন কাজ শেখায়, চরিত্র নিয়ে প্রস্তুতিতে,” — বলেন সারা।
অভিনেত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের দাবি, কাজের প্রতি সারার নিবেদনই তাঁকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণার প্রতীক করে তুলেছে।
নিজস্ব পথের যাত্রী
মাত্র কয়েক বছরের ক্যারিয়ারে বিভিন্ন ঘরানার চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ করেছেন সারা। রোমান্টিক, কমেডি, ড্রামা—সব ক্ষেত্রেই নতুন কিছু দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি।
বলিউডে নিজের জায়গা পাকা করতে গিয়ে সারা প্রমাণ করেছেন, শুধু তারকাসন্তান হলেই চলে না—প্রতিভা, অধ্যবসায় ও আত্মসমালোচনার ক্ষমতাই আসল শক্তি।
সমালোচনার ঝড় যেভাবেই আসুক না কেন, সারা আলি খানের উত্তর একটাই—
“আমি কাজ করে যাব, কারণ সেটাই আমার আসল জবাব।”










সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited