বলিউডের জনপ্রিয় অনস্ক্রিন জুটি আলিয়া ভাট ও বরুণ ধাওয়ান দীর্ঘ বিরতির পর ফের একসঙ্গে হাজির হয়েছেন, তবে এবার কোনো সিনেমায় নয়—একটি টক শোতে। প্রায় পাঁচ বছর পর তারা মুখোমুখি হয়েছেন অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘টু মাচ উইথ কাজল অ্যান্ড টুইঙ্কল’-এর নতুন পর্বে। ২০১২ সালে করণ জোহরের স্টুডেন্ট অব দ্য ইয়ার ছবিতে একসঙ্গে কাজের মাধ্যমে আলোচনায় আসা এই জুটি এবার দর্শকদের সামনে উন্মোচন করেছেন তাদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা মজার ও খোলামেলা গল্প।
শোয়ের শুরু থেকেই বরুণ ও আলিয়ার মধ্যে দেখা যায় আগের সেই বন্ধুত্বপূর্ণ রসায়ন। কখনো একে অপরকে খুনসুটি, কখনো আবার অতীতের স্মৃতি—সব মিলিয়ে আড্ডার আবহ ছিল প্রাণবন্ত।
আলিয়ার দাম্পত্য জীবন নিয়ে অকপট স্বীকারোক্তি
আলিয়া ভাট বলেন, “রণবীর (কাপুর) আমার জীবনে কেবল স্বামী নন, তিনি আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কই দাম্পত্য জীবনকে জীবন্ত রাখে। আমরা একে অপরের সঙ্গে হাসি, রাগ করি, আবার খুব সহজেই মানিয়ে যাই। আমাদের সম্পর্ক কখনও সিনেমার মতো সাজানো প্রেম নয়, বরং একেবারে বাস্তব।”
তিনি আরও যোগ করেন, “রণবীরের ব্যক্তিত্বই আমাকে সবসময় আকর্ষণ করেছে। ওর সঙ্গে আমি সবকিছু শেয়ার করতে পারি—কাজের চাপ থেকে মেয়েকে ঘুম পাড়ানোর গল্প পর্যন্ত। রাহা (তাদের কন্যাসন্তান) এখন আমাদের জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। আমরা দুজনেই কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকি, তবু চেষ্টা করি দিনের শেষটা যেন ওর সঙ্গে কাটানো যায়।”
রণবীর ও আলিয়ার প্রেমের গল্প বলিউডে সবসময়ই আলোচনায় থেকেছে। পাঁচ বছরের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ১৪ এপ্রিল তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। একই বছরের নভেম্বরে কন্যাসন্তান রাহার জন্ম দেন আলিয়া।
বরুণের বিয়ের মজার কাহিনি
অন্যদিকে বরুণ ধাওয়ান নিজের বিয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে বলেন, “আমার বিয়েটা ছিল কোভিডের সময়, যেখানে আনন্দের চেয়ে চিন্তা ছিল বেশি! বিয়ের দিন সকালে শুনলাম আমার ভাই রোহিত নাকি কোভিড পজিটিভ। আমি তো একেবারে ভেঙে পড়লাম—ও ছাড়া বিয়ে কীভাবে করব! পরে জানা গেল, রিপোর্ট অন্য এক রোহিতের।”
ঘটনাটি শুনে আলিয়া, কাজল ও টুইঙ্কল হাসিতে ফেটে পড়েন। বরুণ আরও বলেন, “বিয়ের সেই সময়টা যতটা কঠিন ছিল, ততটাই মজার স্মৃতি তৈরি করে গেছে। এখন ফিরে তাকালে হাসি পায়।”
আড্ডায় হাস্যরস আর নস্টালজিয়া
শোয়ের এক পর্যায়ে বরুণ তাঁর প্রিয় অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীর অনুকরণে পরিবেশ জমিয়ে তোলেন। টুইঙ্কল খান্না তাঁর মজার মন্তব্যে আড্ডায় বাড়তি রঙ যোগ করেন। কাজলও নিজের ‘তীক্ষ্ণ’ রসবোধ দিয়ে দুজনকে মাঝে মাঝে মজা করে বিব্রত করেন।
টুইঙ্কল মজার ছলে বলেন, “আমি বরুণের বিশাল ভক্ত, ওর এনার্জি সংক্রামক।” এতে দর্শকরাও হেসে ওঠেন, আর বরুণ হেসে বলেন, “এই কথা আমার স্ত্রী শুনলে কিন্তু রাগ করবে!”
দর্শকের প্রতিক্রিয়া
শো প্রচারের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলিয়া–বরুণ জুটিকে নিয়ে প্রশংসা শুরু হয়েছে। অনেকে লিখেছেন, “দুজনের কেমিস্ট্রি এখনও ঠিক ততটাই জাদুকরী।” আবার কেউ কেউ বলেছেন, “তাদের সরলতা আর হাস্যরসই শোকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।”
অ্যামাজন প্রাইম ভিডিওর এই টক শোটি বরাবরই জনপ্রিয় তারকাদের ব্যক্তিগত জীবনের অজানা দিক উন্মোচনের জন্য আলোচিত। আর এই পর্বে আলিয়া ও বরুণের উপস্থিতি দর্শকদের দিয়েছে হাসি, স্মৃতি ও মানবিক উষ্ণতার এক দুর্লভ মিশ্রণ।
