বলিউডের আলো ঝলমলে দুনিয়ায় রণবীর কাপুরের নামটাই একসময় ছিল হৃদয়কাঁপানো রোম্যান্সের প্রতীক।
২০০৭ সালে সাওয়ারিয়া দিয়ে যাত্রা শুরু করে তিনি অল্প সময়েই জায়গা করে নেন কোটি ভক্তের মনে। বচনা অ্যা হাসিনো, ইয়ে জওয়ানি হ্যায় দিওয়ানি, তামাশা কিংবা সাম্প্রতিক ব্রহ্মাস্ত্র—প্রতিটি ছবিই তার ক্যারিয়ারে এনে দিয়েছে নানা উত্থান-পতনের গল্প।
একাধিক নায়িকার সঙ্গে প্রেমের গুঞ্জন, ভাঙাগড়া সম্পর্ক, মিডিয়ার নজরদারি—সব মিলিয়ে ব্যক্তিগত জীবন ছিল আলোচনার কেন্দ্রে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে রণবীর বদলেছেন। এখন তিনি কেবল রোম্যান্টিক হিরো নন, বরং সংসারী স্বামী এবং স্নেহময় বাবা।
ঝলমলে পার্টি নয়, পরিবারেই সীমাবদ্ধ উদযাপন
রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বলিউড তারকা রণবীর কাপুর পা দিলেন ৪৩ বছরে।
বলিউডি তারকাদের জন্মদিন মানেই ধুমধাম, পার্টি আর সেলিব্রিটি ভিড়—কিন্তু রণবীরের এবারের জন্মদিন ছিল একেবারেই ভিন্ন।
তিনি কাটিয়েছেন নিজের সবচেয়ে প্রিয় মানুষদের সঙ্গে—মা নীতু কাপুর, স্ত্রী আলিয়া ভট্ট আর কন্যা রাহাকে ঘিরেই।
পরে সাংবাদিকদের উদ্দেশে রণবীর বলেন—
“আমার জন্মদিনে আমি মা, আলিয়া আর রাহার সঙ্গে ছিলাম। এর চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে?”
ছোট্ট রাহার হাতে সাজানো কেক
জন্মদিনের কেক কাটার আগেই ঘটে যায় আবেগঘন এক মুহূর্ত।
আলিয়া ভট্ট নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন একটি ছবি। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ছোট্ট রাহা নিজের ছোট্ট হাত দিয়েই বাবার জন্মদিনের কেক সাজাচ্ছে।
কেকের চারপাশে রঙিন আইসিং, ছোট্ট মোমবাতি—সবকিছু যেন ভরপুর ভালোবাসায় সাজানো।
রাহার বিশেষ উপহার: ৪৩টা চুমু আর চিঠি
জন্মদিনে একাধিক দামি উপহার পেলেও রণবীরের কাছে সবচেয়ে মূল্যবান ছিল রাহার উপহার।
রাহা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল—বাবাকে দেবে ৪৩টা চুমু। আর প্রতিশ্রুতি রেখেছে সে।
রণবীর আবেগঘন কণ্ঠে জানিয়েছেন—
“রাহা বলেছিল আমাকে ৪৩টা চুমু দেবে। সত্যিই দিয়েছে। আমি ভেবেছিলাম মজা করছে, কিন্তু সে খুব সিরিয়াস ছিল।”
শুধু তাই নয়, ছোট্ট রাহা বাবাকে লিখে দিয়েছে একটি হাতে লেখা চিঠি। সেখানে ছোট্ট হাতে আঁকিবুঁকি করে লিখেছে—
“তুমি এই পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ বাবা।”
চিঠিটি রণবীরের কাছে হয়ে উঠেছে জীবনের সেরা উপহার।
রাহার সঙ্গে রণবীরের বন্ধন
মাত্র তিন বছরে পড়তে যাওয়া রাহা বাবার প্রতি ভীষণ আসক্ত।
মিডিয়ায় যখনই তার ছবি এসেছে, দেখা গেছে—বাবার কোলেই সবচেয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে সে। কখনও বাবার সঙ্গে খেলছে, কখনও বাবার চুল টানছে, আবার কখনও বাবার গলায় ঝুলে আছে।
রণবীরের ঘনিষ্ঠজনরা বলেন—ক্যারিয়ারের ব্যস্ততার ফাঁকেও তিনি চেষ্টা করেন প্রতিদিন মেয়ের সঙ্গে সময় কাটাতে।
একসময় যিনি পার্টি, ফিল্ম সেট আর শ্যুটিং ফ্লোরেই ডুবে থাকতেন, এখন তিনি সন্ধ্যা নামলেই বাড়ি ফেরার জন্য উদগ্রীব থাকেন।
ভক্তদের প্রতিক্রিয়া
রণবীর-আলিয়া জুটির ভক্তরা সোশ্যাল মিডিয়ায় শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিয়েছেন কাপুর পরিবারকে।
কেউ লিখেছেন—
“রণবীরের জীবনের সবচেয়ে বড় ব্লকবাস্টার হলো রাহা।”
আবার কেউ বলেছেন—
“বলিউডের রোম্যান্টিক হিরো এখন রিয়েল লাইফে সেরা বাবা।”
আলিয়া-রণবীরের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা বলছেন, এ বছরের জন্মদিন রণবীরের কাছে অন্যরকম মাইলফলক। কারণ প্রথমবার তিনি মেয়ের কাছ থেকে এমন উপহার পেয়েছেন, যা অর্থ দিয়ে মাপা যায় না।
বলিউডে রণবীর কাপুর হয়তো অগণিত হিট-ফ্লপের মুখোমুখি হয়েছেন, কিন্তু জীবনের আসল সাফল্য তিনি খুঁজে পেয়েছেন পরিবারে।
একটি হাতে লেখা চিঠি আর ৪৩টি চুমু প্রমাণ করেছে—গ্ল্যামার, খ্যাতি আর সম্পদের বাইরে পরিবারের ভালোবাসাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
