এক সময়ের জনপ্রিয় নায়িকা সাহিনা আকতার বনশ্রী মঙ্গলবার সকাল ১০টায় না ফেরার দেশে চলে গেলেন। শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় সন্ধ্যার পর, শিবচরের নানাবাড়ির কবরস্থানে।
১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সোহরাব-রুস্তম’ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষেক করেন বনশ্রী। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে অভিনীত ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সফল হয়। এরপর শুরু হয় তার ব্যস্ত চলচ্চিত্র জীবন। নায়ক মান্না, রুবেল ও আমিন খানের সঙ্গে একের পর এক ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন তিনি।
কিন্তু অজানা কারণে হুট করে সিনেমা ছেড়ে দেন বনশ্রী। এরপর শুরু হয় জীবনের কঠিন অধ্যায়। অর্থকষ্টে সংসার চালানো কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। একসময় শাহবাগে ফুল বিক্রি শুরু করেন তিনি। তারপরও জীবিকা চলে না, বাসে বাসে হকারির মতো কাজ করতে হয়। বনশ্রী একবার নিজেই জানিয়েছিলেন, “চলচ্চিত্র ছেড়ে দেওয়ার পরই আর্থিক অনটনে পড়ি। শাহবাগে ফুলের ব্যবসা করেছি। বাসে বাসে হকারিও করতে হয়েছে তিন বেলা খাবার জোগাড় করতে।”
শেষে বনশ্রী ফিরে যান নিজের জেলা মাদারীপুরের শিবচরে। সরকারি আশ্রয়ণ প্রকল্পের একটি ছোট ঘরে আশ্রয় নেন। সরকারি অনুদান হিসেবে পাওয়া ২০ লাখ টাকার সুদই ছিল তাঁর একমাত্র ভরসা।
১৯৭২ সালে মাদবরের চর ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামে জন্ম বনশ্রী। পরিবারসহ ঢাকায় আসেন সাত বছর বয়সে। ছোট ভাই হারুন শিকদার জানান, বেশ কয়েক মাস ধরে বনশ্রী কিডনি, মস্তিষ্ক ও হার্টসহ নানা সমস্যায় ভুগছিলেন। ঢাকার একাধিক হাসপাতালে চিকিৎসার পর কয়েক দিন আগে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান।
এক সময়ের আলোচিত নায়িকার এই নিঃশব্দ বিদায় চলচ্চিত্রপ্রেমীদের কাছে দুঃখজনক সংবাদ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
