বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (বিপিএসসি) ৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা-২০২৫ এর আসন বিন্যাস, সময়সূচি এবং বিস্তারিত নির্দেশনা প্রকাশ করেছে। এমসিকিউ (বহুনির্বাচনী) ধরনের এই লিখিত পরীক্ষা আগামী ১০ অক্টোবর, শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।
এই বিশেষ বিসিএস পরীক্ষাটি শুধুমাত্র ঢাকা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে বিপিএসসি।
১৮২টি কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে পরীক্ষা
পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত মোট ১৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি বিপিএসসি’র নিজস্ব দুটি হলরুমেও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিপিএসসি জানিয়েছে, পরীক্ষার্থীদের সুবিধার্থে বিস্তারিত আসন বিন্যাস, কেন্দ্রভিত্তিক তালিকা ও নির্দেশনা কমিশনের সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
পরীক্ষার সময় ও প্রবেশ নির্দেশনা
পরীক্ষার্থীদের সকাল ৯টার মধ্যেই পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ সম্পন্ন করতে হবে। এরপর কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষার্থীকে কেন্দ্রে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে না।
প্রবেশের সময় সঙ্গে রাখতে হবে—
- বৈধ প্রবেশপত্র,
- এবং ছবি সংবলিত বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসপোর্ট / ড্রাইভিং লাইসেন্স।
বিপিএসসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রবেশের সময় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে এবং সকল পরীক্ষার্থীকে নিয়ম মেনে কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে।
ইলেকট্রনিক ডিভাইস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ
পরীক্ষার হলে কোনো অবস্থাতেই মোবাইল ফোন, স্মার্ট ঘড়ি, ক্যালকুলেটর, ইয়ারফোন, বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বহন করা যাবে না।
বিপিএসসি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে—
“পরীক্ষার হলে কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস পাওয়া গেলে তা পরীক্ষার শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে এবং সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হবে।”
ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশনা
এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ওএমআর (OMR) উত্তরপত্র ব্যবহার করা হবে।
পরীক্ষার্থীদের নিজ নিজ রোল নম্বর, সেট কোড ও প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার জন্য বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে।
কমিশন জানিয়েছে, উত্তরপত্র নষ্ট হলে বা ভুলভাবে পূরণ করা হলে উত্তর মূল্যায়নে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তাই সকল পরীক্ষার্থীকে পূর্ণ মনোযোগের সঙ্গে উত্তরপত্র পূরণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শৃঙ্খলাভঙ্গের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
বিপিএসসি জানিয়েছে, পরীক্ষার সময় কোনো ধরনের অনিয়ম, প্রতারণা বা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত পাওয়া গেলে, সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থীকে তাৎক্ষণিকভাবে বহিষ্কার করা হবে। প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
কমিশন বলেছে, “৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা-২০২৫ একটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়া। তাই পরীক্ষার মর্যাদা ও স্বচ্ছতা রক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছি।”
সুষ্ঠু পরীক্ষার লক্ষ্যে পূর্ণ প্রস্তুতি
বিপিএসসি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষাটি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।
এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের প্রতিনিধি এবং কমিশনের তদারকি দল মাঠে থাকবে। পরীক্ষার দিন সকাল থেকেই সব কেন্দ্রের সঙ্গে সমন্বয় রক্ষা করা হবে।
বিপিএসসি কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন,
“প্রার্থীরা নিয়ম মেনে পরীক্ষা দিলে কোনো জটিলতা বা বিশৃঙ্খলার সুযোগ থাকবে না। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে একটি ত্রুটিমুক্ত, সুষ্ঠু ও নির্ভুল পরীক্ষা আয়োজন করা।”
প্রার্থীদের প্রতি পরামর্শ
বিপিএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে,
- পরীক্ষার আগের দিন আসন বিন্যাস দেখে নেওয়া,
- কেন্দ্রে যাওয়ার সময় পর্যাপ্ত সময় হাতে রাখা,
- ও পরীক্ষার হলে মনোযোগ সহকারে নির্দেশনা অনুসরণ করা।
এ ছাড়া কোনো গুজব বা ভুয়া তথ্য যেন বিশ্বাস না করেন, সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
৪৯তম বিসিএস (বিশেষ) পরীক্ষা-২০২৫ বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে নতুন দক্ষ মানবসম্পদ যোগ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কমিশন বলেছে, তারা চায় এই পরীক্ষা হোক যোগ্যতা, সততা ও মেধার সঠিক মূল্যায়নের প্রতিফলন।
