বাংলাদেশে বাগদা চিংড়ি উৎপাদনে দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান করছে সুন্দরবনের পাদদেশে অবস্থিত উপকূলীয় জেলা বাগেরহাট। জেলার মোট উৎপাদনের হার ২৭ শতাংশ।
লবণাক্ত পানিতে বেশি উপযোগী হলেও আধুনিক প্রযুক্তির কারণে এখন মিষ্টি পানিতেও বাগদা চাষ হচ্ছে। এতে কৃষি জমি, এমনকি পতিত জমিও চিংড়ি খামারে রূপ নিচ্ছে। শিক্ষিত বেকার যুবকেরাও লিজ নিয়ে বাগদা চাষে ঝুঁকছেন।
২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাগেরহাটে ৫৫ হাজার ১৫৯ হেক্টর জমির ৪৬ হাজার ৩১৩টি ঘেরে মোট ২০ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন বাগদা চিংড়ি উৎপাদিত হয়েছে। যার বাজারমূল্য প্রায় ২ হাজার ৯৪ কোটি টাকা। পাশাপাশি রুই, কাতলা ও মৃগেল বিক্রি হয়েছে ৪২১ কোটি টাকার।
উপজেলা ভিত্তিক হিসেবে মোরেলগঞ্জ ও মোংলা উপজেলাই সবচেয়ে বেশি বাগদা উৎপাদন করেছে। মোরেলগঞ্জে ১২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ৮ হাজার ৭৫০টি ঘেরে উৎপাদন হয়েছে ৭ হাজার ৪২৪ মেট্রিক টন। অন্যদিকে মোংলায় ১৩ হাজার ৬১১ হেক্টর জমির ৬ হাজার ৭০টি ঘেরে উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৪৬৭ মেট্রিক টন।
কচুয়া উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারী সুমনা সাহা জানান, এক একর জমিতে বাগদা চাষে খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা। বাজারে বিক্রি হয় ২ লাখ ৩০ হাজার টাকায়, ফলে চাষির লাভ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
মেরিন ফিশারিজ কর্মকর্তা দীপংকর কুমার চক্রবর্তী বলেন, পানি বিশুদ্ধকরণ ও সঠিক নার্সিং পদ্ধতি অনুসরণ করলে বাগদায় ভাইরাস আক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়। ৯০ থেকে ১২০ দিনের মধ্যে এই চিংড়ি বাজারজাত করা যায়।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আবুল কালাম আজাদ জানান, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ চিংড়ি উৎপাদনকারী দেশ। বাগদা চিংড়ি ইতোমধ্যে ভৌগোলিক নির্দেশক (জি আই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এ কারণে ‘সাদা সোনা’ খ্যাতি অর্জন করেছে।
শুধু বাগদা নয়, উপকূলীয় এ জেলায় সমুদ্র থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১ হাজার ৯১১ মেট্রিক টন ইলিশও আহরণ হয়েছে। রপ্তানি আয় বৃদ্ধি ও স্থানীয় জীবিকার অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছে জেলার মৎস্য খাত।
