জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজনীয় তহবিলের চাহিদা প্রায় ৩০ বিলিয়ন ডলার। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে মাত্র এক থেকে দেড় বিলিয়ন ডলার আনতেই বড় ধরনের জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এবার লক্ষ্য পাঁচ বিলিয়ন ডলার—এ জন্য শিগগিরই আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
সোমবার রাজধানীতে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যৌথ আয়োজনে তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা ‘নেভিগেটিং ক্লাইমেট ফাইন্যান্স: মিডিয়া রিপোর্টিং’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দুর্যোগ দুই ধরনের—প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট। মানুষের কর্মকাণ্ডও প্রকৃতির বড় ক্ষতির কারণ। স্থানীয় মানুষ দুর্যোগের সময় নিজে লড়ে টিকে থাকে—এ অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে হবে। এ ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি মিডিয়ার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, জাপানে ছাত্রছাত্রীরা দুর্যোগ নিয়ে সচেতন থাকে। বাংলাদেশের সাংবাদিকদেরও মানুষের মধ্যে সচেতনতা তৈরিতে ভূমিকা রাখতে হবে। তবে বাস্তবে জলবায়ু নিয়ে কথাবার্তা বেশি হলেও কার্যকর পদক্ষেপ কম নেওয়া হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশের প্রায় সব ক্ষেত্রে দৃশ্যমান। ডেঙ্গু, পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, মাতৃমৃত্যু—কোনো ক্ষেত্রই এর বাইরে নয়। অথচ এসব বাস্তবতা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে যথাযথভাবে তুলে ধরা যাচ্ছে না। ফলে জলবায়ু তহবিল থেকে অর্থ আনার ক্ষেত্রে আমাদের অবস্থান দুর্বল হচ্ছে।
ইআরডির সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী জানান, বৈশ্বিক তহবিল থেকে অর্থ আহরণের জন্য বাংলাদেশ নিয়মিত প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। ক্ষতির চিত্র আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখা জরুরি।
পিকেএসএফের চেয়ারম্যান জাকির আহমেদ খান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জীবিকা, খাদ্যনিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা—সব ক্ষেত্রই ঝুঁকিতে রয়েছে। পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফজলু কাদের জানান, এ প্রশিক্ষণের লক্ষ্য সাংবাদিকদের জলবায়ু অর্থায়নের জটিল কাঠামো বোঝাতে সহায়তা করা, যাতে তারা প্রতিবেদনের মাধ্যমে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারেন।
তিন দিনব্যাপী কর্মশালায় দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের ৬০ জন সাংবাদিক অংশ নিচ্ছেন। তারা জলবায়ু অর্থায়ন, বৈশ্বিক তহবিলের কাঠামো, অর্থ আহরণের চ্যালেঞ্জ ও মিডিয়ার দায়িত্ব বিষয়ে প্রশিক্ষণ পাবেন।
