একসময় বাংলাদেশের পাহাড়ি অঞ্চলে চাষ হতো মাল্টা। কিন্তু বর্তমানে ফলটি আর পাহাড়ে সীমাবদ্ধ নেই, বরং সমতল ভূমিতেও মাল্টার চাষ হচ্ছে। সম্প্রতি বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন সাতক্ষীরার চাষীরা। উৎপাদন খরচ কম এবং স্বাদ ও ঘ্রাণে অতুলনীয় হওয়ায় বাণিজ্যিকভাবে ফলটি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন স্থানীয় চাষীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাতক্ষীরার উৎপাদিত মাল্টার পুষ্টি ও গুণগত মান আমদানিকৃত মাল্টার চেয়েও ভালো। এছাড়া আবহাওয়া ও মাটির গুণাগুন অনুকূলে থাকায় কৃষি নির্ভর সাতক্ষীরা জেলায় রয়েছে মাল্টা চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা।
সাদাসোনা খ্যাত চিংড়ি মাছের পাশাপাশি মিষ্টি, কুল, ওল, হলুদ এবং আমের জন্য সমৃদ্ধ জেলা সাতক্ষীরা এখন মাল্টা চাষেও বেশ সুখ্যাতি অর্জন করছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় মোট ১০৫ হেক্টর জমিতে মাল্টার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মাল্টা চাষ হয়েছে কলারোয়া উপজেলায়। এই উপজেলায় ৪০ হেক্টর জমিতে মাল্টার আবাদ হয়েছে।মাল্টা একটি লাভজনক ফসল হিসেবে পরিচিত। মাটি ও আবহাওয়া কিছুটা লবণাক্ত হওয়ায় সাতক্ষীরা জেলার মাল্টা খুবই মিষ্টি ও সুস্বাদু হয়ে থাকে। উচ্চফলনশীল ও ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ মাল্টা ফল দেখতে আকর্ষণীয় সবুজ এবং খেতে সুস্বাদু। দেখতে অনেকটা লেবু গাছের মত। এমন গাছে ঝুলছে থোকা থোকা মাল্টা। এ মাল্টাগুলোর স্বাদও বেশ মিষ্টি।
কলারোয়া উপজেলার হেলাতলা গ্রামের মাল্টা চাষি মো. আক্তারুজ্জামান জানান, কম খরচে মাল্টা চাষ করে তিনি অনেক লাভবান হয়েছেন। গতবছর তিনি ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ৭ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছিলেন। তা থেকে তিনি সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দুইলাখ টাকা লাভ করেছিলেন। এবছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে মাল্টা চাষ করেছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে এবারও তিনি আড়াই থেকে প্রায় তিনলাখ টাকা লাভবান হবেন বলে আশাবাদী।