স্টাফ রিপোর্ট:: সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।শুক্রবার (২ জুন) সকাল ১০টায় সিলেট জালালাবাদ গ্যাস মিলনায়তনে মেয়র পদে ৭ জন, ৪২টি সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও ১৪টি সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়।
মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (নৌকা), জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল (লাঙ্গল), ইসলামী আন্দোলনের হাফিজ মাওলানা মাহমুদুল হাসান (হাতপাখা), জাকের পার্টির জহিরুল আলম (গোলাপ ফুল) প্রতীক পেয়েছেন।
এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে আবদুল হানিফ কুটু (ঘোড়া), ছালাহ উদ্দিন রিমন (ক্রিকেট ব্যাট), শাহ জাহান মিয়া (বাস গাড়ি) প্রতীক পেয়েছেন।
এদিন সকালে প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফয়সল কাদের। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করেছেন প্রার্থীরা প্রচার-প্রচারণা।
সিলেট সিটি নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ১১ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন।এর মধ্যে ২৫ মে যাচাই বাছাইতে ৫ জনের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। পরে এই পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে তিনজনে আপিল করলে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করা হয়। এতে মেয়র পদে প্রার্থী বেড়ে সাতজন হয়েছে।
এছাড়া গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। নির্ধারিত সময়ে সাধারণ ওয়ার্ডের ১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরে গেছেন। আপিল শেষে টিকে থাকা মেয়র ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কোনো প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যহার করেননি।
প্রতীক বরাদ্দের শুরুতে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীদের নির্বাচনী আচরণবিধি সম্পর্কে অবহিত করেন। এ সময় মেয়র প্রার্থী এবং সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা মিলনায়তনে উপস্থিত ছিলেন। সকাল ১০টায় একে একে প্রতীক ঘোষণা দেওয়ার পর মিলনায়তন থেকে বেরিয়েই মেয়র প্রার্থী এবং সমর্থকেরা প্রচারণা শুরু করেন।
প্রতীক পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, আচরণবিধি মেনেই ২১ জুনের নির্বাচনের প্রচারণা করবেন। নৌকা দেশের উন্নয়নের প্রতীক। তিনি এ প্রতীক পাওয়ায় সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকার প্রায় পাঁচ লাখ ভোটার নৌকায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। তিনি সিলেটের মানুষের প্রত্যাশা পূরণে স্মার্ট নগর গঠন, ক্লিন ও গ্রিন সিটি করপোরেশন উপহার দিতে চান।
পরে আনোয়ারুজ্জামান কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে মেন্দিবাগ ও শাহজালাল উপশহর এলাকায় প্রচারপত্র বিলির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু করেন। এ সময় আনোয়ারুজ্জামানের সঙ্গে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলামও নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে প্রচারণা চালানোর কথা বলেন। তিনি আগামী সময়ে সিলেট সিটিকে সুন্দর ও পরিকল্পিত নগরী হিসেবে গড়তে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান। পরে তিনিও নগরের মেন্দিবাগ ও শাহজালাল উপশহর এলাকায় লিফলেট বিলির মাধ্যমে প্রচারণা শুরু করেন।
ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাহমুদুল হাসান সাংবাদিকদের বলেন, সিলেট সিটি করপোরেশনে গত ২০ বছরে যে উন্নয়ন হয়নি, তিনি নির্বাচিত হলে সে উন্নয়ন করবেন। এ সময় তিনি নির্বাচিত হলে হোল্ডিং ট্যাক্স ২০ শতাংশ কমানো ও ব্যবসায়ীদের ট্রেড লাইসেন্স পেতে বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি দিতে উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান। সিটি করপোরেশনকে তিনি দুর্নীতিমুক্ত করবেন বলেও মন্তব্য করেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলা শেষে তিনি এবং তার কর্মী–সমর্থকেরা হাতপাখা নিয়ে মিছিল করে নগরের মেন্দিবাগ, সোবহানীঘাট এবং শাহজালাল উপশহর এলাকায় প্রচারণা চালান।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় জানিয়েছে, ৭৯ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই নগরে ওয়ার্ড আছে ৪২টি। মোট ভোটার ৪ লাখ ৮৬ হাজার ৬০৫ জন। তাঁদের মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৫৩ হাজার ৭৬৩ জন এবং নারী ২ লাখ ৩২ হাজার ৮৪২ জন। মোট কেন্দ্র ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ১ হাজার ৩৬৪টি। তফসিল অনুযায়ী ২১ জুন পঞ্চমবারের মতো সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited