খুলনায় রোটারী স্কুলের সুবর্ণজয়ন্তী (৫০ বছর পূর্তি) উপলক্ষে শুরু হলো দুই দিনব্যাপী উৎসবমুখর আয়োজন। প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু হয় এ অনুষ্ঠানমালার।
বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় শুরু
সকাল ৯টায় প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে উৎসবের উদ্বোধন হয়। খালিশপুর গাবতলা থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে পৌরসভা মোড় প্রদক্ষিণ করে আবার স্কুল প্রাঙ্গণে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ছিল ব্যানার, ফেস্টুন, রঙিন পোশাক, ব্যান্ডপার্টির সুর—সব মিলিয়ে পুরো পরিবেশ হয়ে ওঠে আনন্দমুখর।
পরে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
উদ্বোধন ও কেক কাটা
বেলুন ও কবুতর উড়িয়ে মূল অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার। এরপর সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে কাটা হয় কেক। উৎসবের শ্লোগান ছিল— “আলোকিত হোক আগামীর স্বপ্ন”।
আলোচনা ও সাংস্কৃতিক আয়োজন
দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল মুক্ত আলোচনা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। আলোচনায় অংশ নেন স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। তারা শিক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধ গড়ে তুলতে রোটারী স্কুলের অবদানের কথা তুলে ধরেন। পরে গান, নাচ ও আবৃত্তি পরিবেশন করে শিক্ষার্থীরা।
প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মিলনমেলা হয়ে ওঠে আবেগঘন। পুরোনো সহপাঠীদের দীর্ঘদিন পর দেখে অনেকে আনন্দে আপ্লুত হন।
২০০০ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী সালেহীন আহমেদ রোমেল বলেন, “এতদিন পর পুরোনো সহপাঠী-বন্ধুদের একসঙ্গে দেখে আনন্দে আপ্লুত হচ্ছি। যেন আবার সেই ছেলেবেলায় ফিরে গেছি।”
বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও উৎসব
বৃষ্টি উপেক্ষা করে সকাল থেকে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া উপস্থিতিতে স্কুল প্রাঙ্গণ উৎসবে ভরে ওঠে। অনেকেই পরিবার-পরিজন নিয়ে এসেছিলেন। একে অপরকে দেখে আলিঙ্গন, ছবি তোলা, গল্পগুজব—সব মিলিয়ে পুরো আয়োজনটি পরিণত হয় মিলনমেলায়।
দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি
জানা গেছে, সুবর্ণজয়ন্তীর এই আয়োজন চলবে আগামীকাল শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সারাদিনব্যাপী। থাকবে আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে নস্টালজিক আড্ডা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত পর্যন্ত চলবে আনন্দঘন এই উৎসব।
স্মৃতিময় ৫০ বছর
১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠিত রোটারী স্কুল অর্ধশতক অতিক্রম করেছে এবছর। শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে ভূমিকার জন্যও পরিচিত এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, এই সুবর্ণজয়ন্তী শুধু উদযাপন নয়, বরং নতুন প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার একটি সুযোগ।
