শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীতে হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে অনুষ্ঠিত হলো শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী কুমারী পূজা। ভক্ত-অনুরাগীদের উপচেপড়া ভিড়ের মধ্য দিয়ে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এ পূজায় পূজিত হন হবিগঞ্জের চিড়াকান্দি গ্রামের শিশু উৎসা চক্রবর্তী।
পূজার আয়োজন ও ঐতিহ্য
হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মিশনে কুমারী পূজার আয়োজন চলে আসছে শত বছরেরও বেশি সময় ধরে। দেবী দুর্গার শক্তি ও মাতৃত্বকে কুমারী রূপে আরাধনা করার এই আচার ভক্তদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়। মহাঅষ্টমীর দিন মিশন প্রাঙ্গণে ভক্তরা সমবেত হয়ে পূজার শুভক্ষণে অংশ নেন।
এ বছর পূজিত হয়েছেন উৎসা চক্রবর্তী। শাস্ত্রীয় নিয়ম অনুযায়ী তিনি ‘মালিনী কুমারী’ রূপে আরাধ্য হন। পূজারত অবস্থায় তাঁর পরনে ছিল লাল শাড়ি, হাতে শাঁখা, মাথায় ঝলমলে মুকুট আর দুই হাতে পুষ্প।
কুমারী উৎসার পরিচয়
উৎসার বয়স ৬ বছর ৮ মাস ১৯ দিন। বাবা উজ্জ্বল চক্রবর্তী ও মা ঋক্তা ভট্টাচার্যের কন্যা উৎসা হবিগঞ্জের দি লার্নিং স্টার একাডেমির প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাঁর দেবীরূপে আসীন হওয়ার মুহূর্তে ভক্তরা ভক্তিভরে প্রণাম নিবেদন করেন।
পূজার পরিবেশ ও নিরাপত্তা
পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠান অনুসারে পুরোহিত মন্ত্রোচ্চারণ করে উৎসাকে দেবীরূপে বরণ করেন। মিশন প্রাঙ্গণজুড়ে ভক্ত-দর্শনার্থীদের ভিড়ে সৃষ্টি হয় এক আধ্যাত্মিক পরিবেশ।
হাজারো মানুষের উপস্থিতি সামাল দিতে মিশন কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছিল কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। দর্শনার্থীরা দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে ভেতরে প্রবেশ করে কুমারী মাতার দর্শন লাভ করেন।
ভক্তদের অনুভূতি
স্থানীয়রা জানান, শতবর্ষ ধরে এ পূজা হবিগঞ্জবাসীর ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে আছে। প্রতিবছর এই দিনে ভক্তরা দেবীর কৃপা প্রার্থনা করতে মিশন প্রাঙ্গণে ভিড় জমায়।
