প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে প্রথমবারের মতো পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী বছরের জানুয়ারির মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে চায় সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
ইসি সূত্র জানায়, প্রবাসী ভোটারদের (ওসিভি) পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাচনী দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি এবং জেলে বা আইনি হেফাজতে থাকা ভোটাররাও পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিতে পারবেন। এজন্য গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন করে অনলাইন নিবন্ধন ও ভোটদানের সুযোগ তৈরি করা হয়েছে।
পোস্টাল ভোটিং বাস্তবায়নে ‘ওসিভি-এসডিআই’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, যার ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪৯ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় অনলাইন নিবন্ধন অ্যাপ, ট্র্যাকিং মডিউল ও ভোটার শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
তবে প্রবাসীদের কাছে ব্যালট পাঠানো ও ফেরত আনার জন্য আরও অন্তত ৪০০ কোটি টাকা লাগতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা দিয়েছে ইসি। ডাক বিভাগের মাধ্যমে এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।
ইসির কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, পোস্টাল ব্যালটে ভোটাররা প্রতীকভিত্তিক ব্যালট হাতে পাবেন। প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা পছন্দের প্রতীকে ভোট দিয়ে ডাকযোগে ফেরত পাঠাবেন।
তিনি বলেন, “অ্যাপে নিবন্ধন করা ভোটাররা অনলাইনে প্রার্থীর তালিকা ও প্রতীক দেখতে পারবেন। এরপর ব্যালটে ভোট দিয়ে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত পাঠাতে হবে।”
ইসির পরিকল্পনা অনুযায়ী—
- সেপ্টেম্বরের মধ্যে অনলাইন অ্যাপ তৈরি ও পরীক্ষামূলক নিবন্ধন সম্পন্ন হবে।
- নভেম্বর থেকে ভোটার তালিকাভুক্তি শুরু হবে এবং ২০ নভেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারির মধ্যে ব্যালট পাঠানো হবে।
- নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত ভোট পাঠানো যাবে।
প্রাথমিকভাবে ৮ থেকে ১০ লাখ প্রবাসী ভোটার পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে ভোট দেবেন বলে ধারণা করছে ইসি।
ভোটগ্রহণের পাশাপাশি প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রচারণা ও ভোটার শিক্ষা কার্যক্রমও চলবে আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য সালিম আহমাদ খান জানান, “প্রবাসীদের জন্য প্রায় ১০ লাখ ভোটের টার্গেট রাখা হয়েছে। ধাপে ধাপে প্রযুক্তিগত কাজ ও প্রচারণা এগিয়ে নেওয়া হবে।”
