সিলেট প্রতিনিধি:: দরজায় কড়া নাড়ছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন।যারা সিটির পুরাতন ভোটার এবং যে ওয়ার্ডগুলো ইতিমধ্যে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন ছিলো, তারা ইতিমধ্যে ঠিক করে নিয়েছেন কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের মধ্যে নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন আর কাকে ভোট দেবেন না।
কিন্তু নতুন করে যেসব ওয়ার্ড সিসিকের আওতায় এসেছে সেসব ওয়ার্ডবাসীদের কথা ভিন্ন। তারা যাচাই বাচাই করে ঠিক করবেন কাকে ভোট দিলে সিটির সকল নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করতে পারবেন? কার শিক্ষাগত যোগ্যতা কী? এলাকা বা সমাজের জন্য অতীতে কে কতটুকু অবদান রেখেছেন? কার সামাজিক যোগাযোগ ভালো? যেহেতু গড়ে ওঠা নতুন ওয়ার্ডগুলোতে অধিকাংশই স্থানীয় বাসিন্দা সেহেতু পারিবারিক অবস্থান ও কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের পেশা, যোগ্যতা ও ব্যক্তিগত ইমেজকে বিবেচনায় আনছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনে এবার প্রথমবারের মতো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে দক্ষিণ সুরমার ২৮, ২৯ ও ৩০ নম্বর ওয়ার্ড। নতুন তিন ওয়ার্ডেই প্রার্থীর ছড়াছড়ি। নির্বাচন নিয়ে প্রার্থী ও ভোটারদের মতো সাধারণ মানুষের মধ্যে উৎসাহ বিরাজ করছে।
দক্ষিণ সুরমার পিরুজপুর, পর্বতপুর, বদিকোনা আংশিক, উম্মুর কবুল, লাউয়াই, মোহাম্মদপুর ও ধরাধরপুর গ্রাম নিয়ে ২৯ নং ওয়ার্ড গঠিত। শহরের পাশেই আরেক শহর ২৯ নং ওয়ার্ড। স্বাস্থ্যব্যবস্থা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা ও অত্যাধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্বলিত এলাকা হলেও এতোদিন ছিলো সিসিকের বাহিরে। উক্ত ওয়ার্ডের শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো হলেও শিক্ষার হারে তুলনামূলকভাবে কম। এলাকায় আছে মাদক, জুয়া ও অপরাধের থাবা।
দক্ষিণ সুরমার ও বিশ্বরোড ঘেঁষা এ ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন ৯ জন। এরা হচ্ছেন- মাজহারুল ইসলাম শাকিল, জাবেদ আহমদ জীবন, গোলাম মোস্তফা কামাল, মোঃ রেজাউল ইসলাম, সাহেদ খান স্বপন, ইসমাইল হোসেন মুরাদ, মো. পংকি মিয়া, রাজিব আহমদ ও লাহিনুর রহমান লাহিন। এ ওয়ার্ডে এবার মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চলে এসেছেন শাকিল, রেজাউল ও জাবেদ। এ ওয়ার্ডে ইতিমধ্যেই জমে ওঠেছে ত্রিমুখী লড়াই।
এদের মধ্যে মোঃ রেজাউল ইসলাম সর্বোচ্চ শিক্ষাগত যোগ্যতা, ক্লিন ইমেজ, অমায়িক ব্যবহার এবং সাংগঠনিক দক্ষতার জন্য মনে জায়গা করে নিয়েছেন ভোটারের। তবে অভিযোগ আছে , টাকার আধিপত্য তাকে টক্কর দিচ্ছেন শাকিল। পেশাগত জীবনে শিক্ষক হিসেবে রয়েছে তার তুমুল জনপ্রিয়তা। শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কাছে তিনি রেজা স্যার নামে সুপরিচিত। সহকারী শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করছেন সিলাম পিএল বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে। তার রয়েছে সমাজ ও দেশের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতা। রক্তদাতা, রক্ত সংগ্রাহক, রোটারি ক্লাব, ফুটবল ক্লাব ও সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে উক্ত এলাকায় যে কয়েকজনকে সবার আগে পাওয়া যায় তার মধ্যে তিনি অন্যতম। তিনি একজন সফল সংগঠক। পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সবাই তাকে চিনেনও। বিশেষ করে তরুণ ভোটাদের নজরে তিনিই সেরা প্রার্থী। আর তার ব্যতিক্রমী নির্বাচনী ইশতেহার নজর কেড়েছে আপামর জনতার। তাই এবারের চমক রেজা-ই দেখাবেন এমন বাণী অনেক ভোটারের।
ধন্যাঢ্য পরিবারের সন্তান মাজহারুল ইসলাম শাকিল। শিল্পপতি হুমায়ুন আহমেদ ও তার জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকার তরুণদের কাছেও জনপ্রিয়। এলাকায় আছে তার নিজস্ব বলয়। তাই বিজয়ের মালা তার গলাও ওঠতে পারে।
পিরুজপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার জাবেদ আহমদ জীবন। তিনজনের মধ্যে নির্বাচনে একমাত্র তারই রয়েছে অভিজ্ঞতা। রয়েছে নিজস্ব একটা ভোট ব্যাংকও। তাই চমক দেখাতে মরিয়া হয়ে আছেন সাবেক এই ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
সাহেদ খান স্বপন দখল করে আছেন তাদের ঠিক পরের স্থান। তরুণ কর্মী বাহিনী নিয়ে অবিরাম কাজ করছেন। তিনিও আলোচনায় আছেন।
নতুন ওয়ার্ড হওয়ায় প্রার্থীরাও দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। স্মার্ট ওয়ার্ড, মাদক ও জুয়ামুক্ত ওয়ার্ড, ওয়ার্ডের গ্রামীণ এলাকাকে নগরে পরিণত, সর্বাধুনিক নাগরিক সুবিধা সম্বলিত ওয়ার্ড হিসেবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন প্রার্থীরা।