বিদ্যুৎখাতে সরকারের উন্নয়ন নিয়ে জাতীয় সংসদে দেওয়া নিজের পুরনো বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী ও সাংসদ মমতাজ বেগম। তার আগের বক্তব্যকে ‘ভুলভাবে উপস্থাপন’ না করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (৬ জুন) দিবাগত রাত ১টার দিকে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজ থেকে লাইভে এসে এসব কথা বলেন মানিকগঞ্জ-২ (সিংগাইর-হরিরামপুর ও সদর) আসনের সংসদ সদস্য মমতাজ।
তিনি জানান, এলাকায় গেলে গ্রামের মা-বোনেরা এসে বলতেন ‘আপা, কিছু চাই না। আমাদের বিদ্যুতের লাইন দেন, মিটার দেন। মিটারের অভাবে বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।’ এই যে একটা সংকট ছিল, তখন সেটা কিন্তু আমরা সমাধান করেছি। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। মানুষ তখন খুশি হয়েছিল। সেজন্য সংসদে বলেছিলাম, মানুষ বিদ্যুৎ চাইত। একসময় এ চাওয়ার ব্যাপারটা আর থাকবে না।
সরকার যেভাবে বিদ্যুতের লাইন দিচ্ছে, উৎপাদন করছে, ঘরে ঘরে মিটার পৌঁছে দিচ্ছে। এখন কিন্তু সত্যিকার অর্থে গ্রামে গেলে কেউ বলে না ‘আপা, দুইটা মিটার দেন, পাঁচটা মিটার দেন।’ মিটার দেওয়ার জায়গা আসলেও খুঁজে পাওয়া যায় না। এটাই কিন্তু বাস্তবতা। আর সেই কথাটাই সংসদে আমি বলেছিলাম। সেটার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে, ভুলভাবে উপস্থাপন করেন অনেকেই। অসাধু কিছু লোকজন খামোখাই দুটো বাজে কথা ফেসবুক-ইউটিউবে বলার চেষ্টা করছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের উদ্দেশে মমতাজ বলেন, দেখেন, আমার কথার সত্যতা আছে। আমি সঠিক সময়ে সঠিক কথাই বলেছিলাম। সাময়িক এ সমস্যা হবে এটা আপনি-আমি কেউ জানতাম না।
মমতাজ বলেন, ‘আজকে যে কথা বলার জন্য লাইভে এসেছি, সাময়িক একটা কষ্টের মধ্যে সারা দেশের মানুষ পড়েছি, সেটা হলো বিদ্যুৎ। এ বিদ্যুৎ নিয়ে যেমন কষ্ট আছে, তেমনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার এবং ইউটিউবে নানা ধরনের কথা, আলোচনা-সমালোচনা ও প্রোপাগান্ডা চালানো হচ্ছে। যেহেতু আমি এমপি, কাজ করতে হলে আমি আমার এলাকায় কী কী কাজ করেছি, কী কাজ করা বাকি আছে, সেগুলো বলার একটি জায়গা হলো সংসদ। সংসদে আমি অনেক বক্তব্য দিই। তার দু-একটি কথা ধরে অনেকেই সমালোচনার ঝড় তুলেছেন এই কষ্টের মধ্যে। কারণ, বিদ্যুৎ থাকছে না, বিদ্যুতের কষ্টটা সবাই পাচ্ছি আমরা। সেটা কমবেশি সবার ঘরেই কিন্তু আজকে এ সমস্যাটা আছে।’
প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর বিষয় উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘ফেসবুকে ঢুকে দেখি, হঠাৎ একজন বলছেন মমতাজের বাড়ি ঘেরাও করা হয়েছে। কেন বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না, সেজন্য ঘেরাও করেছে। এই যে প্রোপাগান্ডা, মিথ্যাচার। এটা নিয়ে আপনাদের বিবেক কি একটুও নাড়া দেবে না? একজন মানুষের বিরুদ্ধে শুধু শুধু এভাবে মিথ্যাচার কেন করছি? আপনাদের বলব–শুধু মানুষকে হয়রানিমূলক কথা বলা, ছোট করা, মিথ্যা বলে তাকে হেনস্তা করা বিবেকবান মানুষের (কাজের) মধ্যে পড়ে না। এ ধরনের প্রোপাগান্ডা থেকে দূরে থাকবেন। মিথ্যাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেবেন না। ধৈর্য ধরুন, আমাদের সঙ্গে থাকুন।
শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরে এ সাংসদ বলেন, আমরা কি জানতাম পাকিস্তানের এ অবস্থা হবে? শতভাগ শিক্ষিতের দেশ শ্রীলঙ্কা, সেই দেশের মানুষের এমন করুণ পরিস্থিতি হবে? আমরা কিন্তু জানতাম না। আমরা অনেক কিছুই জানি না। কখন যে কী হয়, সৃষ্টিকর্তা ছাড়া কেউ জানেন না। যখন আমি সংসদে কথাগুলো বলেছিলাম, সত্যিই আমাদের বিদ্যুতের অবস্থা এত সুন্দর ও ভালো ছিল। সেসময় শতভাগ বিদ্যুতায়ন আমার আসনে করেছি, মানুষকে বিদ্যুতের লাইন দিতে পেরেছি।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited