সিলেট প্রতিনিধি: কবিরাজের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে সিলেটের কানাইঘাট উপজেলায় এক নারীকে (১৮) সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মামলার পর অভিযুক্ত ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৯ মে) উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২৮) রাত সোয়া ১১টায় উপজেলার বীরদল পুরানফৌদ গ্রামের পিপি হবিব আলীর পুকুরঘাটে এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.গোলাম দস্তগীর আহমেদ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে দুদু মিয়া (৩৬), বড়দেশ সরদারী পাড়া গ্রামের বিলাল আহমদের ছেলে ফরহাদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের খলিলুর রহমানের ছেলে আব্দুল করিম, বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের হবিব আলীর ছেলে জুবের আহমদ (২৪) ও বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের ছেলে হেলাল আহমদ (৩৮)।
মামলার এজাহারে ঘটনার বর্ণনায় বলা হয়েছে, প্রায় ২০ দিন পূর্বে দুদু মিয়ার সঙ্গে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভুক্তভোগীর পরিচয় হয়। সেই সুবাদে দুদু মিয়ার সঙ্গে ভুক্তভোগী নারীর প্রায়ই ফোনে কথাবার্তা হতো।ভুক্তভোগী নারীর ৯ মাসের শিশুকন্যা অসুস্থ হলে দুদু মিয়া তাকে পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়া যেতে বলে।
পরে মেয়ের চিকিৎসার নাম করে রোববার (২৮ মে) বিকেল ৩টায় বিয়ানীবাজারে গিয়ে দুদু মিয়া ভুক্তভোগী নারীকে শিশু সন্তানসহ তার বাড়ি থেকে নিয়ে যায়।
এদিকে কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে দুদু মিয়া কানাইঘাটের বীরদল বাজার এলাকায় ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে ঘুরতে থাকে। পরে একই দিন রাত সাড়ে ১০টায় বীরদল বাজারে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। এ সময় দুদু মিয়ার ফোনে তার সহযোগী আব্দুল করিম বীরদল বাজারে চলে আসে ও তারা ভুক্তভোগীকে কৌশলে মোটরসাইকেল যোগে বীরদল খালোমুরা বাজারে নিয়ে যায়।পরে স্থানীয় কিছু লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের আটক করে।
রোববার রাত ১১টায় স্থানীয় লোকজন কানাইঘাট বাজারে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবের আহমদের রিকশায় তুলে দেওয়া হয়। এ সময় ভুক্তভোগী নারী পিছু নেয় দুদু মিয়া ও আব্দুল করিম। একপর্যায় পুরানফৌদ কবরস্থানের সামনে ভুক্তভোগীর রিকশা আসা মাত্রই হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ রিকশার গতিরোধ করে ও তাকে পুরানফৌদ গ্রামের হাবিব আলীর নির্জন পুকুরঘাটে নিয়ে যায়।পরে সেখানে হেলাল ও ফরহাদ ভুক্তভোগীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে।
এ সময় ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতরা পালিয়ে গেলে ভুক্তভোগী আর্তচিৎকারে স্থানীয়রা এসে পুলিশকে সংবাদ দেন। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী মামলা দায়ের করেছেন। সোমবার দিনভর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে হেলাল আহমদ ও আবদুল করিমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, মাদক, মারামারিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। আজ তাদেরকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়েছে। তার সন্তানও বর্তমানে সুস্থ।










সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited