ডেস্ক রিপোর্ট: কোনো অস্ত্রোপচার ছাড়াই আরও আটটি কলম বের করা হয়েছে মানসিক প্রতিবন্ধী আব্দুল মোতালেবের পেট থেকে।এ নিয়ে দুই দফায় অস্ত্রোপচার ছাড়াই মোট ২৩টি কলম বের করা হলো ওই রোগীর পেট থেকে।
সোমবার (২৯ মে) দুপুরে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে কলমগুলো বের করেন চিকিৎসকরা।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) ওই রোগীর পেট থেকে ১৫টি কলম বের করা হয়।
মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে বিনা অস্ত্রোপচারে রোগীর পেট থেকে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা এটিই প্রথম বলে দাবি চিকিৎসকদের।
ওই রোগী একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। তিনি সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার খুকনি আটার দাগ গ্রামের বাসিন্দা। মোতালেব ৪-৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে এসব কলম আস্ত গিলে খেয়েছেন বলে চিকিৎসকদের ধারণা।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ডা. জাহিদুল ইসলাম জানান, সোমবার প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে আরও ৮টি কলম বের করা হয়েছে। তার পেটে আর কলম নেই। বর্তমানে রোগী সুস্থ আছেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পেটে ব্যথায় ভুগতে থাকা মোতালেবের রোগ ডায়াগনোসিস করা যাচ্ছিল না। আমাদের এখানে ভর্তি হওয়ার পর অ্যান্ডোসকপি করে পাকস্থলীতে অনেকগুলো কলম দেখতে পাই। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও আমরা কলমগুলো বের করার সিদ্ধান্ত নিই।এখানে রক্তক্ষরণের শঙ্কা ছিল, ইনজুরি হওয়ার ভয় ছিল। বৃহস্পতিবার তিন, ঘণ্টাব্যাপী অ্যান্ডোস্কপির মাধ্যমে একটি করে ধরে ধরে ১৫টি কলম বের করা হয়। ভেতরে আরও বেশ কয়েকটি কলম থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হই।আজ আবারও অ্যান্ডোস্কপি করে আটটি কলম বের করা হয়। মেডিকেল সাইন্সের ইতিহাসে পেটের মধ্যে এতগুলো কলম বের করার ঘটনা এটিই প্রথম। সম্ভবত আমরাই প্রথম এই সাফল্যের কাজটি করতে পেরেছি।
মোতালেবের মা লাইলী বেগম বলেন, এক বছর তার ছেলের পেটের ব্যথা। বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করেও সুস্থ হয়নি। ১৫ দিন আগে সমস্যা আরও বাড়ে, খেতে পারে না, বমি করে। এ কারণে তাকে এই হাসপাতালে আনা পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পেটের মধ্য থেকে কলম বের করেন চিকিৎসকরা।
তিনি আরও বলেন, ১২ বছর ধরে তার ছেলে মানসিক রোগী। মানসিক চিকিৎসককেও দেখানো হয়েছে। কলমগুলো অজ্ঞান অবস্থায় খেয়েছে মোতালেব।
শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ফেরদৌস মোহাম্মদ খায়রুল আতাতুর্ক বলেন, আমাদের এখানে উন্নতমানের অত্যাধুনিক সব মেশিন রয়েছে। আটটি অ্যান্ডোসকপি মেশিন আছে যার সবগুলো অত্যাধুনিক। প্রতি বিভাগে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি রয়েছে যেগুলো চালু আছে অথবা অল্প দিনের মধ্যেই চালু হবে।
উত্তরাঞ্চলের জনগণের জন্য আশার কেন্দ্র হবে ওই হাসপাতালটি।