লতাপাতা দুলানো মায়া আর চক্ষু জুড়ানো বিনোদন এই বাঙালির জাতির অস্তিত্বের স্পন্দন। এই হাসিতে মিশ্রিত ঐতিহ্যের আবরণ নিজস্ব সংস্কৃতির এক মাইল সুজারু হাসির পুলকিত ছোঁয়া। এই আমাদের গ্রামবাংলা। আনন্দ ঘন মুহূর্তগুলোকে সহসা সরল প্রানে বিলিয়ে দিতে, লড়াই করে বেচে থাকার উপজীব্যের রসবোধকে সামনে আনার প্রয়াসে বিলুপ্তপ্রায় হাডুডু খেলার সাথে পরিচিত নয় এমন মানুষ খুজে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার বটে।
একসময় এই খেলার ব্যাপক প্রচলন ছিল। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে, তবে নগরাঞ্চলেও দেখা যেত। এই খেলাটি বাংলাদেশের জাতীয় খেলা আবার চিরায়ত বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীন খেলা হিসেবেও সমাধিক পরিচিত। কথিত আছে এই খেলার উৎপত্তি ভারতের তামিলনাডুতে।প্রথমদিকে খেলাটির সুনির্দিষ্ট কোনো ধরাবাঁধা নিয়ম-কানুন ছিল না।তবে ১৯৭২ সালে হাডুডু খেলাটি নিয়ম- নীতির ঘন্টায় বেধে কাবাডি খেলায় নামকরণ করা হয় এবং দেয়া হয় বাংলাদেশের জাতীয় খেলার মর্যাদা। বর্তমানে খেলাটি জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে স্থান করে নিয়েছে।
হাডুডু খেলার জন্য ১২.৫০ মিটার লম্বা ১০ মিটার চওড়া একটি মুক্ত উপযোগী অায়তাকার মাঠই যথেষ্ট।
খেলায় দুটি দল থাকে এবং প্রতি দলেই ১২ জন করে মোট ২৪ জন খেলোয়াড় থাকে।উভয়পক্ষে ৭ জন খেলোয়াড় কোর্টে খেলে বাকিরা বাইরে অবস্থান করে।প্রতিযোগিতার সময় দুই অর্ধ মিলিয়ে মোট ৪০ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকে এবং দুই অর্ধের মাঝামাঝি ৫ মিনিট বিরতি থাকে।এই খেলায় একপক্ষের খেলোয়াড় নিজের দম বহাল রেখে প্রতিপক্ষের কোর্টে থাকা খেলোয়াড়কে স্পর্শ করে নিজ কোর্টে ফেরত আসতে পারলেই কেবল পয়েন্ট অর্জিত হয়।যদি এক দল তার প্রতিপক্ষ দলকে আউট করে তাহলে এক পয়েন্ট আর প্রতিপক্ষের সবাইকে আউট করতে পারলে দুই পয়েন্ট অর্জন হয়।আক্রমনে যাওয়া খেলোয়াড়কে কাবাডি কাবাডি ধ্বনিতে নিজের দমকে একটানা ধরে রাখতে হয় যাকে ডাক বলে।
ব্যক্তি ও দলগতভাবে শত্রুপক্ষের আক্রমণ ঠেকিয়ে দেওয়া এবং সাথে সাথেই পাল্টা আক্রমণের কৌশল চর্চা করতে গিয়েই সম্ভবত এ খেলার উদ্ভব। এ খেলায় সফলতার শর্ত হচ্ছে শারীরিক ও মানসিক ক্ষিপ্রতা, পেশীর ক্ষিপ্রতা, ফুসফুসের শক্তি ও সহনশীলতা, দ্রুত চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা ও তা প্রয়োগের সামর্থ। সেইসঙ্গে প্রতিপক্ষের কৌশল ও মনোভাব অনুধাবনের যোগ্যতাও গুরুত্বপূর্ণ।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited