ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার ১ নং যুগ্ম আহবায়ক পরশ সিকদারের অস্ত্র তাক করা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর তাকে সংগঠনের সাময়িক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার আহবায়ক আব্দুস সোবহান ও সদস্য সচিব ফরিদ মিয়া স্বাক্ষরিত এক পত্রে তাকে কারণ দর্শানো ও দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়।
অব্যাহতি পত্রে উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ এপ্রিল উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের ভেরিফাইড আইডি থেকে আগ্নেয়াস্ত্রসহ প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেকট্রিক মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার ১ নং যুগ্ম আহবায়ক আছাদুজ্জামান পরশ সিকদারেরর একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে। যাহা সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রম এবং সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের ফরিদপুর জেলা শাখার আহবায়ক আব্দুস সোবহান বলেন, ‘আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে আছাদুজ্জামান পরশ সিকদারকে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে। তাকে উক্ত সময়ে সংগঠনের কার্যক্রম থেকে সাময়িক সময়ের জন্য অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পরশ সিকদার বলেন, ‘আমার পরিচিত একজন মাছচাষী ঈগলের হাত থেকে মাছ রক্ষার জন্যে একটা ভালো ইয়ারগান ক্রয়ের উদ্দেশ্যে আমাকে নিয়ে ঢাকায় অস্ত্রের দোকানে যায়। সেখানে আমি একটা পিস্তল নেড়েচেড়ে দেখার সময় আমার আওয়ামী পরিবারের একজন ছবিটা তোলে। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর অসৎ উদ্দেশ্যে সে ছবিটা ফেসবুকে ভাইরাল করেছে।’
বোয়ালমারী থানা অফিসার ইন চার্জ মোহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, ‘আমি ছবিটি দেখিনাই। তবে জনৈক ব্যক্তির নিকট থেকে শুনেছি, অন্যের সাথে গিয়ে অস্ত্রের দোকানে সখ করে পিস্তল দেখার সময় অন্যজন ছবিটি তুলেছে।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সক্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী এবং উত্তরাধিকার ৭১ নিউজ সম্পাদক প্রবীর সিকদার তার ফেসবুক পেজে গত ২৭ এপ্রিল ওই মৎস্যজীবী লীগ নেতার পিস্তল প্রদর্শনের ছবিসহ একটি স্ট্যাটাস দেন। তাতে লেখেন, ‘অস্ত্র নিয়ে গবেষণা করা অপরাধের কিছু নয়! এটা নয় নতুন কিছুও!’
ফেসবুকে ওই স্ট্যাটাসের পরেই এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এর আগে গত ২৫ মার্চ কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি আপলোড দেন বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শুভ্রদেব সিং ওরফে সুদেব সিং। এরপর বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। জনমনে আক্রমণাত্মক ও ভীতি প্রদর্শন, সাইবার সন্ত্রাসী কার্য সংঘটনসহ জনমনে অস্থিরতা ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপরাধে উপ-পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ বাবুল হোসেন বাদি হয়ে এ মামলাটি করেন। তবে সুদেব সিং ওরফে শুভ্রদেব সিং দাবি করেছেন, পিস্তলটি খেলনা। স্থানীয় একটি মেলা থেকে পিস্তলটি কেনা।
কোমরে পিস্তল গুঁজে সুদেব সিং ওরফে শুভ্রদেব সিংয়ের ফেসবুকে ছবি পোস্টের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই একই কায়দায় কোমরে পিস্তল গুঁজে ফেসবুকে ছবি দিয়ে সমালোচিত হন ফারদিন মাশরাফি নামের এক কলেজ ছাত্র। তিনি উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কাদিরদী ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও সাতৈর গ্রামের মো. আবুল হাসানের ছেলে। ওই কলেজছাত্র ফারদিন মাশরাফি ছবিটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করে লেখেন, ‘আপনাদের কারণে বাইরে আসতেই হলো, হতাশ।’
