সিলেট প্রতিনিধি: সিলেট নগরে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার বা শনিবার বিদ্যুত সঞ্চালনের লাইনে উন্নয়ন কাজ হয়ে থাকে।যেসব এলাকায় উন্নয়ন কাজ হয় সেসব এলাকায় বিদ্যুত না থাকায় নানা সমস্যায় পড়তে হয় নগরবাসীকে।গ্রাহকদের কথা চিন্তা করে এবং সিলেট নগরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎসেবা নিশ্চিতে সিলেট বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর আওতায় কুমারগাঁও ৩৩/১১ কেভি বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র থেকে আম্বরখানা উপকেন্দ্র পর্যন্ত ৭ কিলোমিটারের ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন করা হয়েছে।
জানা যায়, সোর্স লাইন সংযোজনের ফলে নগরের ৭০ হাজারেরও বেশি গ্রাহক নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ পাবেন।৭ কিলোমিটার এই সোর্স লাইনের মধ্যে ২ কিলোমিটার পাতাল ও ৫ কিলোমিটার ওভার হেড লাইন রয়েছে।
বিগত সময়ে উন্নয়নকাজের জন্য নগরের বড় একটি অংশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকতে হতো এখন থেকে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর অন্তর্ভুক্ত এলাকার বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের মেরামত ও সংস্কার কাজের জন্য শাট-ডাউনের প্রয়োজনীয়তা কমে যাবে। কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সঙ্গে আম্বরখানা পর্যন্ত ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন হওয়ায় গ্রাহকদের এ সুবিধা নিশ্চিত হয়েছে।
সিলেটে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভেলপমেন্টের অর্থায়নে ২০১৯ সালে শুরু হওয়া কাজের অংশ কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের সঙ্গে আম্বরখানা পর্যন্ত ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন। তখন প্রায় ৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশে প্রথম সিলেট নগরে ৭ কিলোমিটার ভূ-গর্ভস্থ বিদ্যুৎ সরবরাহের লাইন নির্মাণ করা হয়।
প্রথম ধাপে হজরত শাহজালাল (রহ.) মাজার এলাকায় দেশের প্রথম ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ লাইন উদ্বোধন হয়। এ প্রকল্পের আওতায় আম্বরখানা উপকেন্দ্র থেকে চৌহাট্টা হয়ে শেখঘাট সার্কিট হাউজ পর্যন্ত সম্পূর্ণভাবে ভূ-গর্ভস্থ লাইনে বিদ্যুৎ সঞ্চালন করা হয়েছে।
বিউবো সূত্রে জানা গেছে, সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ আওতায় ৩৩/১১ আম্বরখানা উপকেন্দ্রে বিদ্যুতের চাহিদা থাকে প্রায় ২৫ মেগাওয়াট। বর্তমানে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে যথাযথ সরবরাহ নিশ্চিত করা হচ্ছে। আগে কোনো কারণে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্রের লাইনে ফল্ট দেখা দিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখতে হতো।
তবে এখন দ্বিতীয় সোর্স লাইন নির্মাণ করায় বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে। দ্বিতীয় সোর্স লাইন সংযোজন হওয়ায় গ্রাহকদের ভোগান্তি আরও কমে যাবে। প্রয়োজন হলে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ ৫০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানোও যাবে।
এব্যাপারে বিউবো বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী ফজলুল করিম জানান, আম্বরখানা উপকেন্দ্রে একটি লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। এ কারণে সঞ্চালন লাইনে কোনো সমস্যা হলে বিতরণ বিভাগ-১ এ দীর্ঘ সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকত। এই সমস্যা সমাধানে গত দুই বছর ধরে আমরা কাজ করছিলাম। ৩১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে সোর্স লাইনটি চালু হয়। সোর্স লাইন চালু হওয়ায় এই এলাকায় বিদ্যুতের সমস্যা অনেকটাই কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, কোনো কারণে কুমারগাঁও গ্রিড উপকেন্দ্র থেকে আম্বরখানা ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র লাইনে সমস্যা দেখা দিলে দ্বিতীয় সোর্স লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ অব্যাহত রাখা যাবে। সোর্স লাইনটি চালু হওয়ায় আম্বরখানা ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের লোড সঞ্চালন ক্ষমতা এখন দ্বিগুণ হয়েছে।
তিনি জানান, সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা উন্নয়ন ও সঞ্চালনে ‘সোর্স লাইন’ সংযোজন মাইলফলক হয়ে থাকবে। ৭ কিলোমিটার এই সোর্স লাইনের ২ কিলোমিটার আন্ডারগ্রাউন্ড এবং ৫ কিলোমিটার ওভার হেড লাইন। সিলেটের বিদ্যুৎ ব্যবস্থার উন্নয়নে আরও কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।