ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বৃহস্পতিবার নির্দেশ দেন, মিশর-সংলগ্ন সীমান্ত বাহিরের এলাকাগুলোকে বন্ধ করে দিতে এবং সেখানে ড্রোন হুমকি মোকাবিলায় যোদ্ধা-নিয়মাবলি কড়া করতে আইডিএফকে (ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস) তৎপর হতে। তাঁর এই সিদ্ধান্তকে ‘ড্রোন-বহন অস্ত্র চোরাচালান’ রোধে জরুরি ব্যবস্থা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে।
কাৎজ এক বিবৃতিতে বলেন, ড্রোনের মাধ্যমে অস্ত্র পাচার গাজার যুদ্ধের অংশ এবং এটি শত্রু পক্ষকে সশস্ত্র করার উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে; তাই “এটি থামাতে সব কিছুর ব্যবস্থাই গ্রহণ করতে হবে।” তিনি আইডিএফকে নির্দেশ দিয়েছেন ওই সীমান্ত-সংলগ্ন অঞ্চলটি আনুষ্ঠানিকভাবে ‘বন্ধ সামরিক এলাকা’ ঘোষণা করে সেখানে প্রবেশকারীদের কঠোরভাবে প্রশস্তি না দেওয়ার নির্দেশনা জারি করতে।
ইসরায়েল ও মিশরের মধ্যে প্রায় ২০০ কিলোমিটার (প্রায় ১২৪ মাইল) দীর্ঘ সীমান্ত নেই—এই কারণেই সীমান্তরক্ষায় ড্রোন-ভিত্তিক চোরাচালান গুরুতর প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে বলে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন। সাম্প্রতিক দিনগুলোয় আইডিএফ একাধিক ড্রোন শনাক্ত ও আটক করার কথা জানিয়েছে; রোববার একটি ড্রোনে আটটি বন্দুক ধরা পড়েছিল, আর মঙ্গলবার আরও এক ড্রোন নস্যাৎ করার সময় ১০টি পিস্তল জব্দ করা হয়—এই ঘটনাগুলোই কাৎজকে সজাগ করার পাশাপাশি কঠোর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে প্ররোচিত করেছে।
কাৎজ সীমান্ত এলাকা “বন্ধ” ঘোষণা করার পাশাপাশি ঘোষণা করেছেন যে, যে কেউ নিষিদ্ধ-অঞ্চলে প্রবেশ করলে তাকে ‘লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কাৎজের এই উদ্যোগকে অনেকে ‘পরীক্ষিত ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া’ হিসাবে নির্ধারণ করেছেন; তবে মানবাধিকার ও সীমান্তে বসবাসকারীদের ওপর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছেন কিছু পর্যবেক্ষক।
স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে কাৎজের সিদ্ধান্তকে সমর্থন করে মন্তব্য করেছেন কঠোরপন্থী নেতারা; জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভি এক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের প্রশংসা করে বলেছেন, সীমান্ত চোরাচালান সন্ত্রাসী উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হচ্ছে — তাই কর্তৃপক্ষের কড়া পদক্ষেপ প্রয়োজন। সমালোচকরা বলেন, সীমান্ত এলাকায় অতিরিক্ত সেনা কার্যক্রম সীমান্তপালিত অর্থতন্ত্র, বেসামরিক পরিবহণ ও স্থানীয় মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে; ফলে কূটনৈতিক ও মানবিক প্রভাব বিবেচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
অন্যদিকে, নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, গাজার যুদ্ধে ড্রোন-ভিত্তিক অস্ত্রচোরাচালান একটি নতুন চ্যালেঞ্জ। ড্রোন প্রযুক্তি দ্রুত মূল্যহীন নয়; সস্তা, অদৃশ্যমান ও সীমাহীনভাবে ব্যবহৃত হলে সীমান্ত-নিরাপত্তার জন্য গুরুতর ঝুঁকি হতে পারে। তাই কাৎজের হুঁশিয়ারির পটভূমিতে আইডিএফের নিয়মাবলি সংশোধন ও সীমান্ত এলাকায় তৎপরতা বাড়ানোই প্রথম উদ্যোগ বলে দেখা হচ্ছে।
এই সিদ্ধান্ত কূটনৈতিকভাবে মিশর-ইসরায়েল সম্পর্কের উপর চাপ তৈরি করতে পারে। মিশর নিজেই সীমান্ত নিরাপত্তা ও রাফাহ ক্লিয়ারিংয়ের বিষয়ে সংবেদনশীল; অতীতে সীমান্ত অঞ্চলে আঞ্চলিক নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তা নিয়ে কিছুকিছু সময় তাড়াহুড়ো দেখা গেছে। ফলে দুই দেশের মধ্যে সমন্বয় বজায় রেখে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই উত্তম বলে কূটনীতিকরা পরামর্শ দিচ্ছেন।
সর্বশেষ—ইসরায়েলের নির্দেশনা কার্যকর হলে সীমান্তে টহল, বিমান ও ড্রোন-বিরোধী ব্যবস্থা কড়া হবে এবং উপস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ আরও জোরদার করা হবে। তবে এ ধরনের কঠোর নিরাপত্তা নীতির সঙ্গে লোকাল জনজীবন ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিবেচনাও সমানভাবে গুরুত্ব পাওয়ার দাবি উঠছে। পরিস্থিতি কিভাবে দেখা দিবে, তা আগামী দিনগুলোতে স্পষ্ট হবে—বিশেষত সীমান্তে আর কোনো ড্রোন-চোরাচালান রোধ করা যায় কি না এবং দুই পাশের কূটনৈতিক সমন্বয় কেমন ভ‚মিকা রাখে তার ওপর নির্ভর করবে।











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited