যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার সতর্ক করে বলেন, গাজা সম্পর্কিত যে যুদ্ধবিরতি ও ট্রানজিশনাল চুক্তি মধ্যস্থতা করে গড়া হয়েছে — তা লঙ্ঘন করা হলে হামাসকে “নির্মূল” করা হবে। একই সঙ্গে তিনি একটি সুযোগ দিয়েও বলেন যে, হামাস যদি চুক্তি পালন করে তবে যুক্তরাষ্ট্র ও অংশীদাররা তাদেরকে যুদ্ধবিরতি মেনে চলার সুযোগ দেবে।
ট্রাম্প এই মন্তব্য প্রস্তাবিত শর্তাবলীর কথা বলেন হোয়াইট হাউসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজকে স্বাগত জানাতে আয়োজিত একটি সংবাদব্রিফিংয়ে। তিনি সাংবাদিকদের জানান, “আমরা হামাসের সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি — তারা যদি ভালো আচরণ করে, তাহলে সব ঠিক থাকবে; যদি না করে, তাহলে আমরা গিয়ে প্রয়োজন হলে তাদের নির্মূল করব। তারা এটা জানে।” এই মন্তব্য বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম প্রত্যক্ষভাবে সংযুক্তির মতো উদ্ধৃত করেছে।
একই সময়ে ট্রাম্পের নজিরবিহীন কড়া ভাষ্যের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিকরা মোতায়েন হচ্ছেন — তাঁর বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও উপদেষ্টা জ্যারেড কুশনার ইতিবাচক কূটনৈতিক ফ্রন্টে ইতোমধ্যে ইসরায়েলে রয়েছে এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট জে.ডি. ভ্যান্সও দেশটিতে যাওয়ার পথে রয়েছেন, যাতে ভঙ্গুর এই যুদ্ধবিরতি ধরে রাখা যায় এবং চুক্তির বাস্তবায়ন তদারকি করা সম্ভব হয়।
ট্রাম্প একদিকে বলছেন যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি গাজায় স্থল সৈন্য মোতায়েন করবে না, অন্যদিকে তিনি স্থানীয় ও আঞ্চলিক অংশীদারদের সমন্বয়ে একটি আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী গঠনের সম্ভাবনার কথা উন্মুক্ত রেখেছেন। তিনি বলেন, গাজার সমস্যা সমাধানে কয়েক ডজন দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং ইরান-সহ আঞ্চলিক সমর্থনের ঘাটতি হামাসকে আরও দুর্বল করেছে—তাই প্রয়োজন হলে দ্রুত ও কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সক্ষমতা রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
এই কথাবার্তার প্রেক্ষিতে হামাসের শীর্ষ আলোচক খলিল আল-হাইয়া বলেছেন দলটি এখনও যুদ্ধবিরতি চুক্তি পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং মৃত বন্দীদের মরদেহ উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে; তবে এই প্রক্রিয়া কঠিন ও সময়সাপেক্ষ। তিনি বলেছেন, “মৃতদেহগুলো উদ্ধার করা আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন; তবু আমরা আন্তরিকভাবে এ কাজের চেষ্টা করছি।” হামাসের এই বক্তব্যও আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো অনুলিপি করেছে।
ইসরায়েলি-প্যালেস্টাইনি সংঘর্ষের বিষয়ে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা তৎপর রাখা হলেও সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও অভিযোগ — যেমন ইসরায়েল অভিযোগ করে হামাস কিছু মৃত জিম্মির হস্তান্তরে বিলম্ব করছে, এবং হামাস অভিযোগ করে ইসরায়েলের সংঘর্ষ পরিবহণে অসদাচরণ হচ্ছে — এসব বিভিন্ন ইস্যু চুক্তির টেকসই বাস্তবায়নকে ঝুঁকির মুখে রেখেছে। তদুপরি, গাজার শাসন ও অস্থায়িত্ব নিরসনে বৈদেশিক অংশগ্রহণ ও প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে বড় ধরনের দ্বিধা-দ্বন্দ্বও রয়ে গেছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের কড়া বক্তব্য সহজেই উত্তেজনা বাড়াতে পারে, তবে একই সঙ্গে তা একটি রাজনৈতিক সংকেতও দেয়—চুক্তিকে সফল করতে যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ় এবং চুক্তি ভঙ্গ হলে বিন্দুমাত্র সহনশীল হতেই রাজি নয়। রিজিয়নাল সমর্থনের অবস্থা, রিয়েল-টাইম ঘটনার প্রবণতা এবং কূটনৈতিক তৎপরতা — এগুলোই আগামী দিনের শান্তি প্রক্রিয়ার গতিপথ নির্ধারণ করবে।
(সংবাদসূত্র: রয়টার্স, আল-জাজিরা, ব্লুমবার্গ, টাইমস অব ইস্রায়েল, আরব নিউজ।) (Reuters)











সত্যের সন্ধানে আমরা — NRD News Media Limited