বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে নামছে নতুন আত্মবিশ্বাস ও আক্রমণাত্মক ব্যাটিং পরিকল্পনা নিয়ে। আগামী শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া সিরিজের জন্য আজ দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচক প্যানেল।
এই সিরিজের সবক’টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। প্রথম ম্যাচ ১৯ অক্টোবর, বাকি দুইটি যথাক্রমে ২১ ও ২৩ অক্টোবর। তিন ম্যাচের সিরিজের ফলাফল নির্ধারণ করবে, বাংলাদেশের ওয়ানডে ব্যাটিং ইউনিট কতটা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যর্থতার পর।
দলে ফিরলেন সৌম্য সরকার
দীর্ঘদিন পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন বাঁহাতি ওপেনার সৌম্য সরকার। সম্প্রতি আফগানিস্তানের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজের জন্য তাকে ডাক দেওয়া হয়েছিল, তবে ভিসা জটিলতায় যেতে পারেননি। এবার ওয়ানডে দলে আবারও সুযোগ পেয়েছেন এই হার্ডহিটার ব্যাটার।
সৌম্যের ফেরা নির্বাচকদের কাছে বড় এক ব্যাটিং বিকল্প তৈরি করেছে। টপ অর্ডারে অভিজ্ঞতার ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি আক্রমণাত্মক ইনিংস গড়ার দায়িত্বও থাকবে তার কাঁধে। অন্যদিকে, আগের সিরিজে সুযোগ পাওয়া নাঈম শেখ মাত্র এক ম্যাচ খেলে বাদ পড়েছেন।
প্রথমবার ওয়ানডে দলে মাহিদুল অংকন
প্রথমবারের মতো ওয়ানডে দলে সুযোগ পেয়েছেন তরুণ উইকেটরক্ষক ও মিডল অর্ডার ব্যাটার মাহিদুল ইসলাম অংকন। এর আগে টেস্ট দলে অভিষেক হয়েছিল তার, কিন্তু ওয়ানডেতে এবারই প্রথম সুযোগ।
ঘরোয়া লিগে তিন ফরম্যাটেই ধারাবাহিক পারফর্ম করছিলেন অংকন, বিশেষ করে মধ্যক্রমে তার দৃঢ় ব্যাটিং নির্বাচকদের নজর কাড়ে। ভবিষ্যতের পরিকল্পনায় তাকেই ভাবছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
বাকি পরিবর্তন ও বাদ পড়ারা
ইনজুরির কারণে দলে নেই লিটন দাস ও পারভেজ ইমন—দুজনই টপ অর্ডারে নিয়মিত মুখ ছিলেন। তবে দলের ভারসাম্য রাখতে রাখা হয়েছে অভিজ্ঞ বোলিং আক্রমণ। স্পিনে থাকছেন তানভীর ইসলাম ও রিশাদ হোসেন, যারা সাম্প্রতিক সিরিজে উন্নতি দেখিয়েছেন।
পেস বোলিং আক্রমণে আছেন নিয়মিত মুখ তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ ও তানজিম হাসান সাকিব। নাহিদ রানা এবার দলে জায়গা পাননি।
জাকের আলী, যিনি আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ছন্দহীন ছিলেন, তাকেও রাখা হয়েছে—দলের স্থিতিশীলতা বিবেচনায়। তবে ইয়াসির রাব্বির ফেরার সম্ভাবনা থাকলেও নির্বাচকরা তাকে ডাকে নি।
বাংলাদেশের ওয়ানডে দল:
মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ তামিম, সৌম্য সরকার, সাইফ হাসান, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মাহিদুল ইসলাম অংকন, জাকের আলী, শামীম হোসেন, নুরুল হাসান সোহান, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিব ও হাসান মাহমুদ।
আগামীর দিকনির্দেশনা
বিশেষজ্ঞদের মতে, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে এই সিরিজ বাংলাদেশের জন্য বড় পরীক্ষার মঞ্চ। আফগানিস্তান সিরিজে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর এবার মিরাজের নেতৃত্বে দল নতুন কৌশল নিয়ে মাঠে নামবে। সৌম্য ও অংকনের অন্তর্ভুক্তি ব্যাটিং অর্ডারে নতুন প্রাণ এনে দিতে পারে।
প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু বলেন, “দলের ভারসাম্য ও তরুণদের পারফরম্যান্স বিবেচনায় এনে দল সাজানো হয়েছে। আমরা চাই, অভিজ্ঞ ও নতুন খেলোয়াড়রা একসাথে নিজেদের প্রমাণ করুক।”
এই সিরিজ জিতে বাংলাদেশ শুধু আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবে না, বরং আসন্ন চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতিও আরও দৃঢ় হবে। এখন অপেক্ষা—মিরপুরের মাঠে টাইগারদের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই দেখার।
