সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৪ উইকেটে পরাজিত করে এগিয়ে গেল বাংলাদেশ। দুর্দান্ত সূচনা এনে দিয়েছিলেন দুই তরুণ ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম ও পারভেজ হোসেন ইমন। তবে মাঝপথে রশিদ খানের ঘূর্ণি বোলিংয়ে ছন্দপতন হলেও নুরুল হাসান সোহানের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের জয়।
দুর্দান্ত সূচনায় তামিম–ইমন
১৫২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ পায় স্বপ্নের শুরু। তানজিদ হাসান তামিম (৫১) ও পারভেজ হোসেন ইমন (৫৪) উদ্বোধনী জুটিতে ১০৯ রানের দারুণ ভিত্তি গড়ে তোলেন। তামিম ৩৭ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় করেন অর্ধশতক, আর ইমন খেলেন ৩৭ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কার ঝলমলে ইনিংস।
এই জুটির ওপর ভর করেই একসময় ম্যাচ প্রায় হাতের মুঠোয় চলে আসে বাংলাদেশের।
রশিদের ঘূর্ণিতে ধস
কিন্তু আফগান অধিনায়ক রশিদ খান হঠাৎ করেই ম্যাচে ফেরান দলকে। তিনি এক ওভারে পরপর দুই বলে ফেরান তামিম ও শূন্য রানে সাইফ হাসানকে। পরের ওভারে তিনি এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন জাকের আলি (৬) ও শামিম হাসানকে (০)।
মাত্র ২ ওভারের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১১৮। তখন ৩৪ রান প্রয়োজন ছিল জয়ের জন্য, হাতে মাত্র ৪ উইকেট। ম্যাচের রঙ একেবারেই পাল্টে যায়।
সোহানের দৃঢ়তায় জয়
সঙ্কটময় সময়ে দলের হাল ধরেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। ১৩ বলে ২৩ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে ম্যাচকে ফিরিয়ে আনেন। তাঁকে যোগ্য সহায়তা দেন রিশাদ হোসেন (৯ বলে অপরাজিত ১৪)। ১৮.৪ ওভারে ৬ উইকেটে ১৫৩ রান তুলে ৪ উইকেটের জয়ে সিরিজে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ।
রশিদ খান ২১ রানে ৪ উইকেট নিয়েও শেষ পর্যন্ত দলের জয় নিশ্চিত করতে পারেননি।
আফগানিস্তানের ব্যাটিং ব্যর্থতা
এর আগে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে আফগানিস্তান নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে তোলে ১৫১ রান। শুরু থেকেই বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত আক্রমণে বিপর্যয়ে পড়ে আফগানরা।
রহমানুল্লাহ গুরবাজ লড়াই করে করেন সর্বোচ্চ ৪০ রান (৩১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কা)। অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী ২৫ বলে ৩৮ রান করে দলের সংগ্রহ সমৃদ্ধ করেন। শেষদিকে শারাফুদ্দিন আশরাফের ১২ বলে অপরাজিত ১৭ রান আফগানিস্তানকে ১৫০’র ঘরে পৌঁছে দেয়।
বাংলাদেশের হয়ে তানজিম হাসান সাকিব ও রিশাদ হোসেন নেন ২টি করে উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমান ও নাসুম আহমেদ ছিলেন যথেষ্ট কৃপণ।
সিরিজে এগিয়ে বাংলাদেশ
তরুণদের জ্বলে ওঠা, রশিদের ঝড় কাটিয়ে সোহানের নেতৃত্বগুণে ম্যাচ জেতা—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য ছিল এটি এক গুরুত্বপূর্ণ জয়। এই জয়ে বাংলাদেশ তিন ম্যাচের টি-২০ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল।
এখন সামনে বাকি দুটি ম্যাচ। আফগানিস্তান ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া থাকবে, আর বাংলাদেশ চাইবে সিরিজ নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়তে।
