পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হওয়া লঘুচাপের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ভোলা রাতভর প্রবল ঝড়ো হাওয়া, বজ্রপাত ও ভারি বর্ষণের কবলে পড়েছে। এতে জেলার নদনদী উত্তাল হয়ে উঠেছে এবং জনজীবনে নেমে এসেছে ভোগান্তি।
বুধবার (১ অক্টোবর) ভোর থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গাছপালা উপড়ে পড়া, বিদ্যুৎ বিভ্রাট ও কৃষিজমির ফসলের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
নৌ চলাচলে শঙ্কা
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা আঞ্চলিক কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম জানান, “আবহাওয়া আরও খারাপের দিকে গেলে ভোলার সব নৌ-রুটে লঞ্চ, ট্রলার ও ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।”
ইতোমধ্যে অনেক যাত্রী নৌযান চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। মেঘনা নদীসহ আশপাশের নদনদীতে বড় বড় ঢেউ সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
আবহাওয়া অফিসের সতর্কতা
ভোলার আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া খারাপ অবস্থা আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
তিনি বলেন, “বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাত অব্যাহত থাকতে পারে। এজন্য ভোলা উপকূলসহ উত্তর ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ স্থানে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
এ কারণে উপকূলে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে।
প্রশাসনের প্রস্তুতি
ভোলার জেলা প্রশাসক মো. আজাদ জাহান বলেন, “ঝড়, জলোচ্ছ্বাসসহ সম্ভাব্য যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ প্রস্তুত রয়েছে। দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় আমরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও স্বেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রেখেছি।”
জনগণের মধ্যে শঙ্কা
উপকূলীয় ভোলা জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে টিকে থাকে। এবারও ঝড়ো হাওয়ায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। অনেকেই আগেভাগে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কৃষকরা তাদের মাঠের ফসল বাঁচাতে চেষ্টা চালাচ্ছেন, তবে দীর্ঘস্থায়ী বৃষ্টি হলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
