বাংলা চলচ্চিত্রের দর্শকরা রুনা খানকে চেনেন তার প্রবল সংলাপ, চোখের ভাষা এবং ভিন্নধর্মী চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। ছোটপর্দা থেকে শুরু করে বড়পর্দা—সব জায়গায়ই রুনা তার অভিনয় দক্ষতায় আলাদা হয়ে উঠেছেন। কিন্তু অনেকের কাছে অজানা, তার প্রথম সিনেমার অভিষেক হয়েছিল আজ থেকে প্রায় দেড় যুগ আগে।
প্রথম সিনেমার গল্প
২০০৮ সালে রাজিবুল হোসেন পরিচালিত ‘ঊনাদিত্য’ এবং তারও আগে ‘বালুঘড়ি’ সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন রুনা খান। সেই সময় দুটি সিনেমা বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে দেখানো হলেও প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়নি।
এর পেছনে প্রধান কারণ ছিল— প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতা এবং সেন্সর বোর্ডের অনীহা। ফলে সিনেমাগুলো শুধুমাত্র সীমিত মহলে প্রদর্শিত হয় এবং সাধারণ দর্শক তা দেখতে পারেনি।
বড়পর্দায় আনুষ্ঠানিক অভিষেক
২০১৭ সালে রুনা খানকে বড়পর্দায় আনুষ্ঠানিকভাবে হাজির করে তৌকীর আহমেদের ‘হালদা’ এবং সাজেদুল আউয়ালের ‘ছিটকিনি’। কিন্তু ‘ঊনাদিত্য’ ও ‘বালুঘড়ি’ যেন রয়ে যায় অদেখা এক অধ্যায় হিসেবে।
রি-মাস্টারিং এবং নতুন প্রযুক্তি
নির্মাতা রাজিবুল হোসেন এবার সেই আক্ষেপ ঘোচানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। সিনেমাগুলো নতুন প্রযুক্তিতে রি-মাস্টার করা হয়েছে।
- ‘ঊনাদিত্য’ এবার দর্শকরা দেখবেন ফাইভ-কে রেজোলিউশন এবং ৫.১ ডলবি ডিজিটাল সাউন্ডে।
- ‘বালুঘড়ি’-তে যুক্ত করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI)-নির্ভর নতুন সংযোজন, এমনকি একটি নতুন গানও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
রুনা খান এই মুহূর্তকে বলছেন তার জন্য অত্যন্ত বিশেষ। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন,
“প্রতিটি চরিত্রই আমার কাছে সন্তানসদৃশ। এবার সেই চরিত্রগুলো প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দর্শকদের হৃদয়ে আরও গভীর ছাপ ফেলবে।”
বাংলা সিনেমার জন্য এক ধরণের ফিরে দেখা
যখন ডিজিটাল চলচ্চিত্র একেবারেই নতুন ধারণা ছিল, তখনই তৈরি হয়েছিল ‘বালুঘড়ি’ ও ‘ঊনাদিত্য’। আজকের দিনে এসে এই সিনেমাগুলো প্রমাণ করছে, ভালো কাজ কখনো সময়ের গণ্ডিতে আটকে থাকে না।
দর্শকরা এবার সুযোগ পাবেন সেই সিনেমাগুলো দেখতে, যা দেড় দশক আগে তারা মিস করেছেন। এটি শুধু রুনা খানের জন্য নয়, বাংলা সিনেমার ইতিহাসের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ ফিরে দেখা এবং পুনর্জাগরণ।
