বাংলাদেশ বিশ্বে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন বলেছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা সাহসের সঙ্গে বুক ফুলিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করবেন। প্রশাসন সার্বক্ষণিকভাবে নিরাপত্তার বিষয়ে সজাগ থাকবে, যাতে নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠিত হতে পারে।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর নালাপাড়া সার্বজনীন দুর্গোৎসব উদযাপন পরিষদ আয়োজিত “শ্রী শ্রী শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২৫” উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ধর্ম উপদেষ্টা জানান, পূজার সময় কোনো অপরাধ বা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য একটি বিশেষ হটলাইন চালু করা হচ্ছে। আগামীকাল ২১ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সারাদেশে পূজার সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে সভা অনুষ্ঠিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, “এই দেশ আমাদের সবার। এখানে সব ধর্মের মানুষ সাম্প্রদায়িক সৌহার্দ্যে বসবাস করবে। সরকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সর্বদা কাজ করছে।”
বরাদ্দের বিষয়েও নতুন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে ড. খালিদ হোসেন বলেন, আগে দুর্গাপূজার অনুদান ছিল ২ কোটি টাকা, এবার তা বাড়িয়ে ৫ কোটি টাকা করা হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে ২৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি মন্দির ও পুকুরঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে। ঢাকার খিলক্ষেতে রেলওয়ের জায়গা মন্দির নির্মাণের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ঢাকেশ্বরী মন্দির কমপ্লেক্সের পাশে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগও নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মাদ ইউনুস।
সামাজিক সম্প্রীতির গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “যারা সাম্প্রদায়িক, তারা কখনো মানবিক হতে পারে না। আমাদের মন-মানসিকতা বদলাতে হবে, হিংসা-বিদ্বেষ দূর করে মিলেমিশে সোনার বাংলা গড়তে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছরে সব ধর্মের মানুষের অবদান অনস্বীকার্য।”
পূজার সময় অশান্তি সৃষ্টিকারীদের কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করে অপরাধ প্রতিহত করতে হবে। যারা মন্দির বা উপাসনালয়ে হামলা চালিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে।
সভায় সভাপতিত্ব করেন দক্ষিণ নালাপাড়া সমন্বয় পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন অসীত বরণ সেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম, জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম সান্তু, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি দীপক কুমার পালিত, সহকারী পরিচালক রিংকু কুমার শর্মা এবং মন্দির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অনিল পাল প্রমুখ।
